নিজস্ব প্রতিবেদক: মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় এক মধ্যবয়সী নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের নাম হালিমা আক্তার (২৫)। তিনি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ফুলদি গ্রামের পানশারচর এলাকার রাকিব হোসেন প্রধানের স্ত্রী। নিহত হালিমা আক্তারের স্বামী পেশায় একজন পিকআপ চালক। শশুড় বাড়ি বসত ঘর থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত হালিমা আক্তার নেহা আক্তার (৯) এবং মাহিন হোসেন (৪) দুইটি সন্তান রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮জুন) এই ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা যায় ঈদুল আজহার দিন রাতে পারিবারিক কারণে স্বামী এবং স্ত্রীর বাক বিতান্ডার মধ্যে ঝগড়া হয়। সেই ঝগড়ায় রাগে খুবে স্ত্রীর হালিমা আক্তার ঘরের আড়ায় উরনা পেঁচিয়ে ফাঁসি দেয়। এ ঘটনায় পারিবারিক সূত্রে আরো জানা যায় মেয়েটির বাবা-মা তার মেয়ের জামাইর নামে একটি এনজিওর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকার মতো ঋণ নেয়। তবে সে ঋণ যথাযথ ভাবে পরিষদ করলেও মেয়ের বাবা সৌদি আরব প্রাবাসী অবৈধ হওয়ার সেখানে আটক হয়ে যায়। সেই আটকের খবর মেয়ের জামাই রাকিব হোসেন শোনতে পাওয়ার পর গত ১০ দিন যাবত তার স্ত্রী হালিমার সাথে ঝগড়া করতো। রাকিব হোসেন তার স্ত্রীকে বলতো এখন তর বাবা তো টাকা পাঠাতে পারবে না তর বাবা মা কোথায় থেকে এনজিওর কিস্তি দিবে এনজিওতে নাম আমার তাই টাকাটা তো আমাকে পরিষদ করতে হবে। এই সব অপমান মূলক কথা কাটাকাটি সম্মানহাানি থেকে নিজেকে বাঁচাতে হালিমা আত্মহত্যা করতে পারে বলে ধরনা করা হচ্ছে। তবে এ ঘটনায় হালিমা আক্তারের পরিবারের দাবি এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশের কাছে জবানবন্ধি দেওয়া নিহত হালিমার ৯ বছরের মেয়ে নেহার সাথে কথা বললে তিনি জানান, ঈদের দিন রাতে বাবা মার জাগরা হয়। তার বাবা তার মাকে অপমান করে। পরে ভোর রাতে আমার বাবা পিকাপ গাড়ি নিয়ে প্রতিদিনের মতো ট্রিপ দিতে চলে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে তার মা গলায় ফাঁসি দিয়েছে সেই ফাঁসি দেওয়ার দৃশ্য সে নিজে দেখেছে বলে পুলিশের কাছে জবানবন্দি দিয়েছে। পরে তার কান্নাকাটি শুনে চাচি বিউটি এগিয়ে আসলে দরজা খুলে দিয় সে তারা ঘরের ভেতর ঢুকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে মাকে নামায়।
এ বিষয়ে নিহতের স্বামী রাকিব হোসেন প্রধান বলেন, যারা হত্যাকান্ড দাবি করছেন এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। একটি সংসারে ছোটখাটো ঝগড়া হবে এটি স্বাভাবিক। তবে সকাল বেলা আমি কাজে বের হওয়ার আগে পরিবারকে বলে গিয়েছিলাম হালিমার মতিগতি ভালো না তোমরা তাঁকে দেখে রাইখো। তার সাথে কেউ কথা বইলো না। তবে হালিমা তাঁর শশুড় আমার বাবাকে কৌশলে হাতে একশত টাকা দিয়ে বাজার থেকে মোরগির জন্য ফিট আনতে বলে বাজারে পাঠায়। এর পর ঘর খালি হয়ে যায় সুযোগ পেয়ে সে এই ভাবে আত্মহত্যা করে। তবে আমি ভাবতে পারিনি ছোটখাটো ঝগড়ার বিষয় নিয়ে সে এই কাজটি করবে।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনর্চাজ মো: রাজিব খাঁন জানান, ঘটনা শোনার পর পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয়েছে এটি হত্যা নাকি আহত্যা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়া দিন রয়েছে।