বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সভাপতি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, আমরা যদি দুর্নীতি দূর করতে না পারি, তাহলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অবারিত অনেক সম্ভাবনাই কার্যকরী হবে না।
বুধবার রাজশাহীর একটি হোটেল মিলনায়তনে অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গঠিত বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির জনশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় রাজশাহীর স্থানীয় অর্থনৈতিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও সার্বিক অবস্থার নানা অভিযোগ ও পরামর্শ শোনেন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্যরা।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গই কোনো না কোনোভাবে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। দুর্নীতি অনেক ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। যাদের আইন প্রণয়ন করার কথা, তারাই দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে গেছেন। যাদের আইনের সুরক্ষা দেওয়ার কথা তারা দুর্নীতিতে যুক্ত হয়েছেন।
তিনি বলেন, জনকল্যাণের জন্য যাদের আইন প্রয়োগ করার কথা তারা দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে গেছেন। পাচার হয়ে যাওয়া টাকা ফেরত আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের ভেতরে যারা দুর্নীতি করেছেন তাদের শাস্তি দিতে হবে। যদি দৃশ্যমান শাস্তি না হয়, আগামীদিনে দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য নীতিগতভাবে যে নজরদারির কথা আমরা সকলেই বলছি সেটা কার্যকর করা সম্ভব হবে না। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের এক নম্বর শক্র দুর্নীতি।
অনুষ্ঠানে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সভাপতি ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আমরা দেখেছি বিগত সময়ে মন্ত্রণালয়ের সচিবদের অনেকেই কিভাবে ব্যবসায়ী হয়ে গেলেন। পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা সব কেমন করে রাজনীতিবিদ হয়ে গেলেন। অনেকে মনে করেন, কেবল ব্যবসায়ীরাই রাজনীতিবিদ হননি, বিগত সময়ে রাজনীতিবিদরাও অনেকেই ব্যবসায়ী হয়ে গেছেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক একে এনামুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি এবং সিপিডির সিনিয়র ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
জনশুনানিতে অংশগ্রহণকারী নাগরিকরা তুলে ধরেন রাজশাহী নগরীসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প, প্রকল্পের দুর্নীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রশাসনে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির প্রসঙ্গ ও অভিযোগ। নগারিক সমাজের প্রতিনিধিরা তুলে ধরেন উন্নয়নে আঞ্চলিক বৈষম্য ও বেকারত্বের কথাও।