ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও কুৎসা রটানোর অভিযোগে প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়েছিল। তবে প্রযোজকের বিরুদ্ধে চিত্রনায়কের আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত না হওয়ায় মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা যায়, বাদীপক্ষ নারাজির আবেদন করলেও তদন্তে পর্যাপ্ত উপাদান না থাকায় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ মামলা খারিজ করে দেন। ফলে প্রযোজক রহমত উল্লাহ মামলার দায় থেকেও অব্যাহতি পেয়েছেন।
যদিও এ মামলার পুনরায় তদন্ত চেয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন শাকিবের আইনজীবী খায়রুল হাসান।
আদালত সূত্র জানায়, তদন্ত করে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তবে মোহাম্মদ রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে বাদীর আনা অভিযোগ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮’র ২৪/২৫/২৯ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। পরে এ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন শাকিবের আইনজীবী।
গত ১ সেপ্টেম্বর অসুস্থ থাকায় নারাজিতে উপস্থিত ছিলেন না শাকিব খান। এ জন্য বাদীপক্ষ নারাজি প্রদানে সময়ের আবেদন করেন। তবে ওইদিন ট্রাইব্যুনাল সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে মামলাটি খারিজ করে দেন।
পিবিআই’র তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাদী চিত্রনায়ক শাকিব খানের আনা অভিযোগ পর্যালোচনা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে।
এ মামলা সংক্রান্তে বাদীর দেওয়া পেন ড্রাইভ আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়। দালিলিক সাক্ষ্য পর্যালোচনা করা হয়েছে। বাদীর আনা অভিযোগে উল্লিখিত ‘ইউআরএল’ সমূহে তদন্তকালীন সময়ে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রবেশ করে কোনো প্রকার তথ্য পাওয়া যায়নি। এতে ‘ইউআরএল’সমূহ পরীক্ষা করে কোনো তথ্য পাওয়া যাবে না বলে তা পরীক্ষা করার প্রয়োজন বোধ করিনি।
বাদীর দুজন সাক্ষীসহ নিরপেক্ষ আরও দুজন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। আরও সাক্ষী জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা করা হয়েছে। মামলাটি সার্বিক তদন্তে প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়নি।
পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘এ মামলায় জমা দেওয়া পেনড্রাইভে যে লিংক ছিল, সেগুলো ওপেন করতে পারিনি। যেহেতু আমি পারিনি, সেটা ফরেনসিক পরীক্ষাতেও পাবে না। তাই এ মামলার অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছি।’
শাকিব খানের আইনজীবী খায়রুল হাসান গণমাধ্যমে বলেন, ‘এই মামলার নারাজির ধার্য তারিখে সময়ের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন। একইসঙ্গে মামলাটি খারিজ করে দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি।’
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন চিত্রনায়ক শাকিব খান। ওইদিন ট্রাইব্যুনাল মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
ওই মামলার অভিযোগে বলা হয়, ‘আসামি রহমত উল্লাহ আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বক্তব্য প্রদান করে শাকিবকে সামাজিকভাবে অপমান অপদস্ত ও হেয়প্রতিপন্ন করেন। আসামি নিজেকে প্রযোজক হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে প্রতারণার উদ্দেশ্যে মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচার করে শাকিবের সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন করেছেন।’