মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাত একটার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফে সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের কে আটক করা হয়। আটকদের মধ্যে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে।
দালাল চক্রের সদস্যরা হলেন , টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বী এলাকার নুনা বেগম (৩৮), মো. রিদুয়ান (১৯), সাবরাং ইউনিয়নের কচুবনিয়ার মো. আব্দুল্লাহ (২১)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বাসিন্দার সাইফুল ও তার বোনের স্বামী ইসমাইল, ফয়সাল, ইয়াছিন, গফুর, নুর নবী মাঝিরসহ একটি মানবপাচার চক্রের বড় সিন্ডিকেট রয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে টাকার বিনিময়ে তারা মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডে মানবপাচার ও মাদকের সিন্ডিকেট পরিচালনা করে আসছে।
বিদেশে পাচারের জন্য লোকজন সংগ্রহ করে টেকনাফের বিভিন্ন বাড়িতে রাখা হয়। যদি কেউ রাখতে অস্বীকার করতো তাদের অস্ত্রের ভয় দেখানো হতো। পরে মাছ ধরার ট্রলারে করে তাদের পাচার করা হতো।
আটক পাচারচক্রের সহযোগী নুনা বেগম বলেন, ‘টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বী এলাকার বাসিন্দার সাইফুল ও ইসমাইল মালয়েশিয়ায় মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত। প্রায়ই লোকজন রাখার জন্য তাদেরকে হুমকি দিতো। কয়েকদিন ধরে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ২০ জন লোক আমার বাড়িতে রেখে চলে যায়। লোকজন না রাখার জন্য বলা হলে হুমকি দেয় এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোরপূর্বক লোকজন বাড়িতে রেখে চলে যায়। তার বিনিময়ে কিছু টাকা দিতো।’
রোহিঙ্গা নাগরিক নজিম উল্লাহ বলেন, ‘৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে থাইল্যান্ড পৌঁছে দেওয়া কথা বলে গত ১৩ অক্টোবর তাকে টেকনাফ নিয়ে আসে দালাল ইসমাইল। আসার পর আজ পাঠাবো কাল পাঠাবো বলে রেখে দেয়। বুধবার রাতে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে আসে।’
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী এলাকার বাসিন্দার নুনা বেগমের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন তারা। গোপন সংবাদে বিশেষ অভিযান চালিয়ে নারী ও পুরুষ ও শিশুসহ ২৪ জন রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। আটকদের মধ্যে এক নারীসহ তিনজন মানবপাচারকারী চক্রের সহযোগী রয়েছেন।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আটকদের কাছ থেকে জানা যায়, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বী এলাকার বাসিন্দার সাইফুল ও তার বোনজামাই ইসমাইলের মাধ্যমে সাগরপথে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন সংগ্রহ করে টেকনাফে উপকূলীয় এলাকায় রাখতো। পরবর্তীতে মাছ ধরার ট্রলার করে সাগরপথে মালয়েশিয়া পাঠানো হয় বলে তাদের থেকে জানা যায়।’
আটক দালাল ও মালয়েশিয়াগামীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।