যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অন্যতম মূল নির্ণায়ক হিসেবে উঠে এসেছে গর্ভপাত সংক্রান্ত ইস্যুটি। হোয়াইট হাউসে আগামী চার বছরের জন্য কে বসবেন, তা ঠিক করতে ভোট দিয়েছেন মার্কিনিরা। একে একে প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে বুথফেরত সমীক্ষার ফলাফল।
ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, নির্বাচনের নির্ণায়ক হিসেবে উঠে এসেছে তিনটি মূল বিষয়, যার মধ্যে অন্যতম গর্ভপাত। কিন্তু গর্ভপাত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে কী সমস্যা তৈরি হয়েছে? জটিলতাই বা কী? কীভাবে তা ভোটের ফলকে প্রভাবিত করতে পারে?
২০২২ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাত নিয়ে জটিলতা শুরু হয়েছে। অনেক প্রদেশেই নারীদের গর্ভপাতের অধিকার খর্ব করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ১৩টি প্রদেশে কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া নারীদের গর্ভাবস্থার সমস্ত পর্যায়ে গর্ভপাতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আরও চারটি প্রদেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৬ সপ্তাহ পর গর্ভপাত নিষিদ্ধ। যে সময়ের আগে অনেকে গর্ভাবস্থার কথা জানতেও পারেন না।
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আমেরিকায় গর্ভপাত বন্ধ হয়নি। বরং সম্প্রতি মাসিক হিসেবে বলছে, বিভিন্ন প্রদেশে গর্ভপাতের সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়েছে। গর্ভপাতের বড়ি বা ট্যাবলেটের ব্যবহার বৃদ্ধি এর অন্যতম কারণ। এছাড়া, বিভিন্ন জায়গায় নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে সংগঠিতভাবে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের গর্ভপাতে সাহায্য করা হচ্ছে বলেও দাবি বিভিন্ন মার্কিন সংবাদমাধ্যমে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক সভাতেও অন্যতম মূল বিষয় হয়ে উঠেছিল এই গর্ভপাতজনিত সমস্যা। মুখোমুখি বসে তা নিয়ে তর্ক করেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। বিতর্কসভায় অবশ্য গর্ভপাত নিষিদ্ধ হওয়ার নেপথ্যে ট্রাম্পের ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি করেছেন হ্যারিস। নিজেকে তিনি গর্ভপাতের সমর্থক, নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সংবেদনশীল হিসেবে তুলে ধরেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গদের মাতৃস্বাস্থ্য নিয়েও চিন্তাভাবনা রয়েছে তার, জানিয়েছেন হ্যারিস।
২০২২ সালে একটি মামলায় মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট গর্ভপাত বন্ধের পক্ষে রায় দিয়েছিল। তারপর থেকেই দেশ জুড়ে গর্ভপাত বিরোধী বিভিন্ন নির্দেশ জারি হতে শুরু করে। গর্ভপাতে একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় বিভিন্ন প্রদেশে। যা অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং তাদের নিকটজনদের ক্ষুব্ধ করেছে।
আগামী চার বছরে বিভিন্ন প্রদেশের সংবিধানে গর্ভপাত নিয়ে কী নিষেধাজ্ঞা থাকে, তা ভোটের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে চান অনেকেই।
সিবিসি নিউজ়-এর বুথফেরত সমীক্ষা বলছে, তাদের সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী পাঁচ শতাংশ মার্কিনি মনে করছেন, গর্ভপাত সমস্যা ভোটের নির্ণায়ক হতে পারে। অর্থাৎ, তারা ওই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই ভোট দিয়েছেন।