মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৫ পূর্বাহ্ন

বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবালের সন্ধান মিলল প্রশান্ত মহাসাগরে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৪১ প্রদর্শন করেছেন

সেন্টমার্টিনের প্রবাল রক্ষায় সেখানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপকে কেন্দ্র করে গত কিছুদিন ধরেই আলোচনায় দ্বীপটি। এরই মধ্যে এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবাল আবিষ্কৃত হলো প্রশান্ত মহাসাগরে।

অসংখ্য ক্ষুদ্র প্রাণী একসঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি প্রাচীরের পরিবর্তে একটি বিশালাকায় প্রবাল গঠন করেছে সেখানে। আকারে নীল তিমির চেয়েও বড় প্রবালটির বয়স ৩০০ বছরেরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করছেন গবেষকেরা।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের একটি দল প্রশান্ত মহাসাগরের দুর্গম অংশে গিয়েছিল জলবায়ু পরিবর্তনে জায়গাটির ওপর কেমন প্রভাব পড়েছে তা জানতে। এ সময় এখানে কাজ করা একজন ভিডিওগ্রাফার এটি আবিষ্কার করেন।

ফিরে এসে ডাইভিংয়ের সহকর্মী এবং ছেলে ইনিগোকে বিষয়টি বলেন। জিনিসটি কী এটা পর্যবেক্ষণের জন্য বাবা-ছেলে একসঙ্গে সাগরের গভীরে নামেন।

পানির নিচে পরিমাপের জন্য ব্যবহার করা হয় এমন একটি টেপের সাহায্যে অভিযানে অংশ নেওয়া বিজ্ঞানীরা প্রবালটির আকার মাপেন। এতে দেখা যায় এটি ৩৪ মিটার প্রশস্ত, ৩২ মিটার লম্বা এবং সাড়ে পাঁচ মিটার উঁচু।

জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মহাসাগর উষ্ণ হওয়ায় বিশ্বব্যাপী প্রবালেরা গুরুতর চাপের সম্মুখীন হচ্ছে। প্রায়ই সাগরের ‘স্থপতি’ হিসেবে বর্ণনা করা প্রবাল একসঙ্গে মিলিত হয়ে বিশাল প্রাচীর তৈরি করতে পারে। এই প্রবাল প্রাচীরে মাছ এবং অন্যান্য প্রজাতি বাস করে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, নতুন আবিষ্কৃত প্রবালটি সুস্থ রয়েছে। এই নমুনাটি অনেক প্রবাল প্রাচীরের চেয়ে গভীর জলে পাওয়া গিয়েছে। ফলের সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চ তাপমাত্রা থেকে এটি নিরাপদ ছিল। এমন একটি সময় প্রবাল আবিষ্কার হলো, যখন আজারবাইজানের বাকুতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৯ চলছে।

শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়া সলোমন দ্বীপপুঞ্জের জলবায়ুমন্ত্রী ট্রেভর মানেমাহাগা বিবিসিকে বলেন, যে তার জাতি নতুন আবিষ্কৃত প্রবালের জন্য গর্বিত।

সলোমন দ্বীপপুঞ্জের মতো ছোট দ্বীপ দেশগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

মানেমাহাগা বলেন, সলোমন দ্বীপপুঞ্জের জন্য আরও অর্থায়ন দেশটিকে বৈচিত্র্যময় কর্মসংস্থান তৈরি করতে সহায়তা করবে। যার অর্থ হলো প্রবাল প্রাচীরের ক্ষতি করে এমন শিল্পগুলিতে কম লোক কাজ করে।

বর্তমানে গাছ কাটা দেশের অর্থনীতির একটি প্রধান অংশ। দেশের বার্ষিক রপ্তানি আয়ের ৫০-৭০ শতাংশ আসে এখান থেকে। তবে এটি উচ্চমাত্রার পানি দূষণ ঘটায় যা প্রবালের ক্ষতি করে।

এরিক ব্রাউন, যিনি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের এই গবেষণা ভ্রমণে একজন প্রবাল বিজ্ঞানী হিসেবে যোগ দিয়েছে, বলেছেন এই প্রবালের স্বাস্থ্য ‘বেশ ভালো দেখাচ্ছে।’

প্রবাল হলো পেভোনা ক্ল্যাভাস নামক একটি প্রজাতি, যা চিংড়ি, কাঁকড়া, মাছ এবং অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীদের একটি বাসস্থান হিসেবে কাজ করে।

নমুনার বয়স বলে দিচ্ছে, এটি অতীতের সামুদ্রিক অবস্থা জানার জন্য একটি জানালার মতো কাজ করবে। এটি কীভাবে বেড়েছে সে সম্পর্কে আরও জানতে বিজ্ঞানীরা এটি নিয়ে আরও গবেষণা করার আশা করছেন।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্য কনজারভেশন অব নেচারের এ সপ্তাহের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে উষ্ণ জলে বসবাসকারী ৪৪ শতাংশ প্রবাল বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে। ২০০৮ সালে প্রজাতিটির সর্বশেষ মূল্যায়নের পর থেকে এই হার এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ