নিকলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাপিয়া আক্তার বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূল লক্ষ্য অর্জনে তরুণদের আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সমাজের সকল স্তরে সুশাসন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা, যা বাস্তবায়নে তরুণদের দায়িত্ব নিতে হবে। দেশ গঠনের যোগ্য কারিগর হিসাবে নিজেকে তৈরী করতে লেখাপড়ায় সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে, কিন্তু লেখাপড়ার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি দুরীকরণে সামাজিক সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে হবে। সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪ খ্রি. সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষ, নিকলী, কিশোরগঞ্জ এ পিস ফ্যাসিলিটের গ্রুপ (পিএফজি) ও ইয়ুথ পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ (ওয়াইপিএজি) কর্তৃক আয়োজিত বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অহিংস অবস্থান ও সামাজিক সম্প্রীতির গুরুত্ব বিষয়ক তারুণ্যের ভাবনা শীর্ষক কর্মশালায় এসব কথা বলেন তিনি।
পিএফজি’র সদস্য জয়দেব আচার্য্য এর সভাপতিত্বে ও পিএফজি’র কোঅর্ডিনেটর রাখী গোপাল দেবনাথের সঞ্চালনায় কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য ও কর্মশালার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন দি হাঙ্গার প্রজেক্ট – বাংলাদেশ এর এমআইপিএস প্রকল্পের ফিল্ড কোঅর্ডিনেট মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, একটি উদার, অসম্প্রদায়িক, সহিংসতা মুক্ত মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণের লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশ, সহিংসতা প্রতিরোধ, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের ইতিবাচক সৌহার্দপূর্ণ রাজনৈতিক সহাবস্থান সৃষ্টি এবং জনগণের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটাতে পরিবর্তনের এজেন্ট হিসেবে তরুণরাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
কর্মশালায় আরো বক্তৃতা করেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জিএম সেলিম রেজা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার আরাধন কুমার দেব, নূরুল ইসলাম মডেল কলেজের অধ্যক্ষ মো: আনোয়ার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ সরকারী কলেজের প্রভাষক মো: খাইরুল আলম, শহীদ স্মরনিকা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: সাফী উদ্দিন, প্রমুখ। মো: সাফী উদ্দিন বলেন, নিউটনের সূত্রের মত প্রতিটা কাজের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া আছে। প্রতিক্রিয়া বাদ দিয়ে সবাইকে ইতিবাচক কাজ করতে হবে। মো: খাইরুল আলম বলেন, বিশ্বায়নের যুগে আমাদের সবাইকে তথ্যর দিক দিয়ে সমৃদ্ধ হতে হবে। আমাদের জ্ঞান যত তথ্য সমৃদ্ধ হবে আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র তত উন্নতি হবে। মো: আনোয়ার হোসেন বলেন, সমাজ বা রাষ্ট্রের পরিবর্তনের পূর্বে নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে। নিজে বদলালেই সমাজ পরিবর্তনের যাত্রা শুরু হবে। শিক্ষার্থী মো: রোকন মিয়া বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সমস্যার কারনে আমাদের সমাজে নানা রকম সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের তরুন সমাজকে একত্রিত হয়ে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সমস্যা নিয়ে কাজ করতে হবে। বনায়ন ও বৃক্ষরোপণের উপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। শিক্ষার্থী রাবেয়া আক্তার সম্পা বলেন, আমাদের আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করতে হবে। কাজ করতে গিয়ে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেললে চলবে না। আমরা যেমন ১৯৭১ এ হারিনি, জুলাই ২০২৪ এও হারিনি, ভবিষ্যতেও হারব না। কর্মশালার সমাপনীতে সভাপতি জয়দেব আচার্য্য বলেন, নিজেরদের আচারনগত পরিবর্তন না হলে সমাজের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তরুণ সমাজকে অবশ্যই মাদকসহ মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ মাদক আমাদের সামাজিক সম্প্রীতি ধ্বংস করে দিচ্ছে।