সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ অপরাহ্ন

রফিকুল আমীনসহ ১৯ জনের মামলার রায় ১৫ জানুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৬ প্রদর্শন করেছেন

গ্রাহকের দুই হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার ২২৭ টাকা পাচারের অভিযোগে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীনসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলায় রায় ঘোষণার জন্য আগামী ১৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালতে মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় বিচারক রায় ঘোষণার জন্য ১৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল আমীন, পরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হারুনুর রশিদ, প্রধান কার্যালয়ের চেয়ারম্যান মো. হোসেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ গোফরানুল হক, মো. সাইদ-উর রহমান, মেজবাহ উদ্দিন স্বপন, ইঞ্জিনিয়ার শেখ তৈয়েবুর রহমান ও গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস, পরিচালক সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, ইরফান আহমেদ সানী, মিসেস ফারহা দিবা ও জামসেদ আরা চৌধুরী, প্রফিট শেয়ারিং ডিস্ট্রিবিউটর মো. জসিম উদ্দীন ভূইয়া, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন ও সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ, ডায়মন্ড এক্সিকিউটিভ এস এম আহসানুল কবির বিপ্লব, জোবায়ের সোহেল ও আব্দুল মান্নান এবং ক্রাউন এক্সিকিউটিভ মোসাদ্দেক আলী খান।

আসামিদের মধ্যে কারাগারে আছেন- ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল আমীন, ফারহা দিবা ও মোহাম্মদ হোসেন। জামিনে আছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হারুনুর রশিদ। বাকি ১৫ আসামি পলাতক।

গ্রাহকের দুই হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার ২২৭ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল আমীনসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার কলাবাগান থানায় মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরকার। মামলাটি তদন্ত শেষে ১৯ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৪ সালের ২০ মার্চ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার। তদন্তে আরও সাতজনের নাম আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট মামলাটির চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন আদালত। এ মামলায় বিচার চলাকালে ১৪০ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের (ডিএমসিএসএল) মামলায় আসামিরা নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য ২০০৯ সালের জুলাই থেকে ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত সাড়ে আট লাখেরও বেশি বিনিয়োগকারীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এ সময় ঋণ প্রদান, অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ, নতুন প্রতিষ্ঠান খোলার নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে, যা পরবর্তীসময়ে আসামিরা লভ্যাংশ, সম্মানী ও বেতন-ভাতার নামে সরিয়ে নিয়েছেন।

মামলার চার্জশিট সূত্রে জানা যায়, ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে পরিচালিত বাগানের মালিকানা ও কোম্পানির দখলে থাকা বাগানে মোট ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৭৮৪টি গাছ পাওয়া গেছে, যার মূল্যমান ২১ কোটি ৯৭ লাখ ৬৬ হাজার ৮৫৩ টাকা।

এছাড়াও কোম্পানির স্থাবর সম্পদের বিনিয়োগ মূল্য ৬১ কোটি ৭৪ লাখ ২৬ হাজার ৩১৭ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানির স্থাবর-অস্থাবর মোট সম্পদের মূল্য ৮৩ কোটি ৭১ লাখ ৯৩ হাজার ১৭০ টাকা। তাছাড়া উক্ত কোম্পানির নামে ব্যাংক স্থিতির পরিমাণ ১২ কোটি ১৪ লাখ ৫৫ হাজার ১২৪ টাকা। সবমিলিয়ে কোম্পানির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৯৫ কোটি ৮৬ লাখ ৪৮ হাজার ২৯৪ টাকা।

চার্জশিটে আরও বলা হয়, আসামি মো. রফিকুল আমীনসহ অন্যরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য স্বল্প বিনিয়োগে অধিক লাভের প্রলোভন দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের সময়ের বেড়াজালে আটকে রেখে কৌশলে প্রতারণাপূর্বক সংগৃহীত অর্থ নানাবিধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিজেদের ভোগদখলে নেওয়াই ছিল প্রকৃত উদ্দেশ্য।

চার্জশিটে বলা হয়, ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের ২০১২ সালের খসড়া হিসাব ও আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১০৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ৪৩৫ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৪১ কোটি ৩৯ লাখ ৯১ হাজার ২৫৭ টাকা। বর্তমানে ডেসটিনির নামে বিভিন্ন ব্যাংকে স্থিতির পরিমাণ ৬ কোটি ৪২ লাখ ৭ হাজার ৫৩ টাকা। অস্থাবর ও স্থাবর সম্পত্তি মিলে দাঁড়ায় ১১৪ কোটি ২১ লাখ ১৭ হাজার ৪৮৮ টাকা। উক্ত সম্পত্তি দিয়েও বিনিয়োগকারীদের পাওনা ১০ হাজার ৯৪৫ কোটি ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা আসামিরা পরিশোধ করতে সক্ষম হবেন না। ফলে বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগের অর্থ ফেরত পাবেন না।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ