১৫ বছর পর আবারও বাংলাদেশ দলের ক্যারিবীয় দ্বীপে টেস্ট জয়। সেটাও আবার দলের নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এবং দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমকে ছাড়াই। বলা যায়, অনেকটা তরুণ দল নিয়ে প্রথমবার টেস্ট সিরিজে নেতৃত্ব দিতে নেমে দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারালো মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
ম্যাচ শেষে মিরাজ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, খুবই ভালো লাগছে, প্রথম ম্যাচ হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচ জিতেছি, এটা অবশ্যই আমার জন্য বড় একটা অর্জন। যেহেতু আমি প্রথম অধিনায়কত্ব করছি, এটা আমার জন্য বড় একটা পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে।’
‘জয়ের কৃতিত্ব দিতে চাই সব খেলোয়াড়কে। আমি যেভাবে পরামর্শ দিয়েছি, সবাই মেনে নিয়েছে। কন্ডিশনটা সহজ ছিল না। সব খেলোয়াড়ের জন্যই অনেক কঠিন ছিল। সবাই মানসিকভাবে এমন ছিল যে ম্যাচটা জিততে হবে। সবাই চেয়েছিল মন থেকে ম্যাচটা জেতার জন্য। এর জন্যই আমরা ম্যাচটা জিততে পেরেছি।’
প্রথম ইনিংসে নাহিদ রানার অনবদ্য বোলিংয়ে ১৮ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। আর এতেই জয়ের আত্মবিশ্বাস পায় টাইগাররা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের রান রেট ছিল ২.২৮। দ্বিতীয় ইনিংসে সেটা দাঁড়ায় ৪.৪৭! মূলত জাকের আলীর ১০৬ বলে ৯১ রানের ইনিংসটি ছাড়াও মিরাজের ৩৯ বলে ৪২, শাহাদাত হোসেনের ২৬ বলে ২৮ রান বড় ভূমিকা রাখে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি সংগ্রহে। দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিংয়ে নেতৃত্ব দেন তাইজুল ইসলাম।
মিরাজ বলেন, ‘আমি খেলোয়াড়দের একটা কথা বলেছি, এই উইকেটে ইতিবাচক চিন্তা ছাড়া খেললে অনেক কঠিন হবে। যেহেতু আমরা (প্রথম ইনিংসে) লিড পেয়েছি ১৮ রানের, এখানে রান করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি যে এই উইকেটে যদি আমরা ২৫০ রান করতে পারি, আমাদের জন্য ম্যাচটা জেতা সহজ হবে। বার্তাটা এই ছিল যে খেলোয়াড়েরা ইতিবাচক খেলবে।’
‘সৌরভ ভাই (মুমিনুল) অসুস্থ হওয়ার পর দলের সবাই বিমূঢ় হয়ে পড়েছিল। ওই জায়গায় (পজিশন) ব্যাটিং করাটা একটু কঠিন। কিন্তু দীপুকে (শাহাদাত) আমি বলেছিলাম, ও রাজি হয়েছে। ওকে আমি একটা কথা বলেছিলাম, এই উইকেটে তুমি ইতিবাচক খেলো। যদি মনে করো, প্রথম বলটাই মারার, তুমি প্রথম বলেই মারো। তোমাকে কেউ কিছু বলবে না। আমি তোমাকে অভয় দিলাম। ও সেভাবেই খেলেছে। ওর ২৮টা রান খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমিও চারে একই মানসিকতা নিয়ে খেলেছি। কারণ, এই উইকেটে রানটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। খেলোয়াড়দের প্রতি বার্তাটাই এটা ছিল, ১টা রানও খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রতিটি খেলোয়াড় যেন রানের জন্য ক্রিকেট খেলে। এর মানে এই না যে টেস্ট ক্রিকেট, ঠেকাব—আমরা এই পরিকল্পনায় খেলেছি।’
মিরাজের ভাষ্য, প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে অলআউট হওয়ার পরও মনোবল হারায়নি টাইগাররা। ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে বোলারদের প্রশংসা করেছেন তিনি।
পুরষ্কার বিতরণী মঞ্চে মিরাজ আরাে বলেন, ‘(প্রথম ইনিংসে) ১৬৪ রানে অলআউট হওয়ার পরও আমরা নেতিবাচক চিন্তা করিনি। খেলোয়াড়েরা খুব ভালো বোলিং করেছে। প্রথম ইনিংসে নাহিদ রানা, তাসকিন ও হাসান মাহমুদ যেমন, দ্বিতীয় ইনিংসের বিশেষজ্ঞ তাইজুল পেয়েছে ৫ উইকেট। সে দুর্দান্ত…আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কীভাবে উন্নতি করব, আমরা সেটা ভাবি। কখনো কখনো আমরা ভুল করব, তবে সেখান থেকে শিখবও।’