বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৫ পূর্বাহ্ন

মাছ ধরার উৎসব: হাওরে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৭ প্রদর্শন করেছেন

বিভিন্ন ধরনের উৎসবের কথা আমরা সকলেই জানি, কিন্তু ‘মাছ ধরার উৎসব’ কথাটি এক সময় শোনা গেলেও এখন আর তেমন শোনা যায় না। তবে বছরের পর বছর ধরে এই ‘মাছ ধরার উৎসব’ এখন চলে আসছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার মেদির হাওরের ‘আটাউরি বিলে’।

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ‘বাইচ’ নামে তিন দিনব্যাপী মাছ ধরা শুরু হয়েছে আজ। জাল আর ছোট-ছোট ডিঙি নৌকা নিয়ে জেলেরা মেতে উঠেছেন মাছ ধরা উৎসবে। এ বছর হাওরে পর্যাপ্ত মাছ না পেয়ে হতাশ জেলেরা। স্থানীয় জেলেদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে এ বাইচে অংশ নিতে।

বাইচে অংশ নেওয়া হরিপদ, নিপেন্দ্র, হারাধন  বলেন, ‘উৎসব মুখর পরিবেশে আমরা মাছ শিকার করছি। ছোট-বড় দেশীয় প্রজাতির পাপদা, সরপুঁটি, টেংরা, বাতাসি ও বোয়ালসহ বিভিন্ন ধরনের বিপুল পরিমাণ মাছ এক সময় এখানে ধরা পরতো। এ বছর মাছ কম পাওয়া যাচ্ছে। তারপরও এটি আমাদের মাছ ধরার উৎসব তাই আনন্দ লাগছে।

নাসিরনগর ভিটাডুবি দিবর মৎস্য সমবায় সমিতি সভাপতি পাপুছন দাস বলেন, ‘অগ্রহায়ণ মাসের মাঝামাঝি সময়ে মৎস্য সমবায় সমিতি থেকে নামমাত্র মূল্যে ইজারা নেওয়া মেদির হাওরের ‘আটাউরি বিলটি’ সমিতির সদস্যদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে তারা মাছ ধরতে থাকে। এ বছর বিলের মধ্যে ভরাট হওয়া কম মাছ পেয়েও বাড়িতে ফিরতে হচ্ছে অনেককে। বিলের মধ্যে খনন না করলে ভবিষ্যতে হয়তো মাছ ধরার এ উৎসব হারিয়ে যাবে। আমরা চাই দ্রুত বিলটি যেন খনন করা হয়।

হবিগঞ্জের বাঘাসুরা  থেকে হাওরে মাছ ধরতে আসা লোকমান মিয়া বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা কয়েকশ মানুষ এখানে মাছ উৎসবে মাছ ধরতে আসি। অন্যান্য বছর অনেক মাছ পেলেও এবার তুলনামূলক মাছের সংখ্যা কম। তারপরও আমরা চাই মাছের এ উৎসব চালু থাকুক।’

নাসিরনগরের ব্যবসায়ী সুহাষ চক্রবর্তী বলেন, ‘কম দামে মাছ কিনতে পারবো, এই ভেবে এসেছি।’

নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা নাসরিন  বলেন, মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে এদিন জেলে পল্লীতে উৎসবের আমেজ বয়ে চলে। প্রতি বছরই বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী বছরের মাঝামাঝি সময়ে জেলেরা আটাউরি বিলে মাছ ধরার জন্য নামে।

উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মেদির হাওরের দৈর্ঘ্য প্রায় ৫০০ একরেরও বেশি। এ হাওরের ‘আটাউরি বিল’ থেকে প্রতি মৌসুমে অন্তত ১০ কোটি টাকার দেশীয় প্রজাতির মাছ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হয়। এসব মাছ থেকে চ্যাপা শুঁটকি তৈরি করে বিদেশেও রপ্তানি করা হয়ে থাকে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ