সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২০ পূর্বাহ্ন

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার খবর যাচাইয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে তদন্তের আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৫ প্রদর্শন করেছেন

বিপ্লব পরবর্তী সময়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার খবর যাচাই করতে স্বাধীন সংবাদপত্র ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

তিনি বলেন, সঠিক তথ্য উদঘাটনের কাজ যদি সরকার করে, তবে তাদের প্রতিবেদনগুলো সন্দেহের চোখে দেখার আশঙ্কা খুবই বেশি।

এটিকে ‘গুরুতর ইস্যু’ উল্লেখ করে শফিউল আলম বলেন, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ও প্রভাবশালী দেশগুলোর সংসদে বাংলাদেশকে ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

কেউ কেউ এসব প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বাংলাদেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পাঠানো বা দেশটিতে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’

শফিকুল আলম বলেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সুশীল সমাজের নেতারা ধর্মীয় ঘটনাবলীর সময় জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রেস সচিব বলেন, এসব ঘটনায় আমাদের কেউ কেউ অসাধারণ রাজনৈতিক পরিপক্বতার পরিচয় দিয়েছেন।

কিন্তু বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতাকে ‘পদ্ধতিগতভাবে অতিরঞ্জিত’ করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, তারা আশা করেন ধর্মনিরপেক্ষ ও উদারপন্থি সংবাদপত্রগুলো পরিষদের ধর্মীয় সহিংসতার অভিযোগগুলো নিয়ে নিজস্ব তদন্ত করবে।

তিনি বলেন, আমরা আশা করি, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোও একই ধরনের তদন্ত করবে।

শফিকুল আলম বলেন, হিউম্যান রাইট ওয়াচ ২০১৩ সালে হেফাজত কর্মীদের গণহত্যার বিষয়ে একটি চমৎকার তদন্ত করেছিল এবং আশা করি একই ধরনের তদন্ত করবে।

প্রেস সিচব বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিচারে আমরা এখনও আদর্শ দেশ নই। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্যের খবর পাওয়া যায়। কথিত ধর্ম অবমাননাকর ফেসবুক পোস্টের কারণে নিয়মিত সহিংসতার ঘটনাও ঘটছে।

তিনি বলেন, নেত্র নিউজের রিপোর্টে দেখা গেছে, সংখ্যালঘু পরিষদ সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষজনিত সহিংসতায় ৯ জন সনাতন ধর্মাবলম্বী নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছিল। তাদের মধ্যে প্রায় সবাই রাজনৈতিক, ব্যক্তিগত ও অন্যান্য কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন।

প্রেস সচিব বলেন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদও এ বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে একই ধরনের একটি ‘বিতর্কিত প্রতিবেদন’ তৈরি করেছে। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনের সুদূরপ্রসারি প্রভাব রয়েছে।

প্রেস সচিব বলেন, সম্প্রতি একজন ব্রিটিশ এমপি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে কথা বলেছেন। মনে হয় তিনি ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি বার বিপ্লবোত্তর হিন্দুদের ওপর হামলার প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমার জানা মতে, শক্তিশালী ও সম্পদশালী হিন্দু আমেরিকান গোষ্ঠী, ভারতের জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং শীর্ষ ভারতীয় বিবৃতিদাতারা এ রিপোর্ট উল্লেখ করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থা বর্ণনা করতে ব্যবহার করছেন। বিশেষজ্ঞরা আমাকে বলেছেন, ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনগুলো বাংলাদেশে সংখ্যালঘুবিরোধী সহিংসতা নিয়ে ভুল তথ্যের বৃহত্তম উৎস।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ