মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সরিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালিকের বিধবা স্ত্রী ও কলেজ পড়ুয়া একমাত্র মেয়ের বসতঘরের আঙিনায় লাগানো বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা স্থানীয় প্রভাবশালীরা জোরপূর্বক কেটে নিয়েছে। বাধা দিতে গিয়ে বিধবা নুরুন নাহার ও তার তরুণী মেয়ে শ্লীলতাহানীর শিকার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এব্যাপারে ভুক্তভোগী বিধবার মেয়ে ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় মা ও মেয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সাল থেকে ক্রয় ও বায়না সূত্রে ৫ শতাংশ ভূমিতে ঘর তৈরি করে বসবাস করছেন বিধবা নুরুন নাহার। ঘরের আঙিনায় লাগিয়েছেন নানা প্রজাতির গাছপালা। যা অনেক বড় হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে নির্বিঘ্নে বসবাস করলেও গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে একই গ্রামের প্রভাবশালী সফর উদ্দিন (৩৫), ইসলাম উদ্দিন (৪৫), গৌছ উদ্দিন (৩২), আলী হোসেন (৩৫), জাকির হোসেন (৩২), হেলাল উদ্দিন (৩৫), আলীম উদ্দিন (৩০), এনাম উদ্দিন, হাসান আহমদসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ ব্যক্তি হাতে দা, কুড়াল নিয়ে বসতবাড়িতে প্রবেশ করে ঘরের আঙিনায় লাগানো আঁকাশী, কাঁঠাল, সুপারিসহ বিভিন্ন প্রজাতির লক্ষাধিক টাকার ৩৫-৪০টি গাছ কেটে ফেলে। গাছ কাটতে দেখে বিধবা নুরুন নাহার ও তার মেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে প্রতিবাদ করলে প্রভাবশালীরা ধাক্কা ও কিলঘুষি মেরে জখম ও শ্লীলতাহানী করে। আত্মরক্ষা করতে ভয়ে মা ও মেয়ে ঘরে ঢুকে যায়। গাছ কাটা শেষ হলে প্রভাবশালীরা তা নিয়ে যায়।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয় নুরুজ আলী, হাসিম গাজী, সেলিম উদ্দিন প্রমুখ জানান, বিধবা নুরুন নাহার ও তার কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে প্রায় ২০ বছর ধরে ৫ শতাংশ জমি কিনে বসবাস করছেন। আঙিনায় গাছপালা লাগিয়েছেন। এভাবে কারও ঘরের সামনের গাছপালা জোরপূর্বক কেটে নেওয়া ঠিক হয়নি।
বিধবা নুরুন নাহার জানান, ২০০৪ সালে ৫ শতাংশ জমি ক্রয় করে ঘর নির্মাণ করে মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছেন। ভূমি মালিকরা সাড়ে তিন শতাংশ দলিল করে দিয়েছেন। বাকি দেড় শতাংশের মালিক বিদেশে থাকায় বায়নাপত্র করে ভোগদখল করছি। উনি দেশে আসলে দলিল করে দেওয়ার শর্ত রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ বৃহস্পতিবার ভোরে সফর উদ্দিন ও ইসলাম উদ্দিন ভাড়াটিয়া লোক নিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘরের সামনে আমার লাগানো গাছপালা কেটে নিয়ে গেছে। বাধা দেওয়ায় আমি ও আমার মেয়েকে ধাক্কা, কিলঘুষি দিয়ে জখম করেছে। ঘরে ঢুকেও তারা মালামাল তছনছ করেছে।
শাহবাজপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ নবগোপাল দাশ জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।