মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন

প্রয়োজনে সরকারের মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জনপ্রতিনিধিদের, কিন্তু কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৬ প্রদর্শন করেছেন

নির্দলীয় সরকারের অধীনে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব দিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। প্রয়োজনে এ সরকারের মেয়াদ বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন। বর্তমান দলীয় প্রতীকের নির্বাচন বাদ দিয়ে নির্দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ ও সিটি করপোরেশন নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন তারা। রোববার জাতীয় সংসদে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে তারা এসব দাবি জানান। ওই বৈঠকে সিটি করপোরেশন, ইউনিয়ন পরিষদসহ সব স্থানীয় সরকারের ২০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।

বৈঠক শেষে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা সবাই বলেছেন নির্দলীয় নির্বাচন হওয়া উচিত। যে পদ্ধতিতে আছে সেই পদ্ধতিতেই যেন হয়, সংসদীয় পদ্ধতিতে যেন না হয়। তারা নারী প্রতিনিধিত্ব অর্থবহ করতে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতির কথা বলেছেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অর্থবহ করতে সব স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি এবং সংসদ-সদস্যদের ভোটে যেন হয় সেটি বলেছেন। অনেকেই স্থানীয় সরকার ভোট বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই সংসদ নির্বাচনের আগে বা পরে করার জন্য বলেছেন। একই সঙ্গে তারা সব সময় সব নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে ভোট আয়োজনের জন্য বলেছেন। এজন্য তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ বাড়ানোর কথাও বলেছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসকদের পরিবর্তে ইসি কর্মকর্তাদের চান তারা।

অন্তর্বর্তী সরকার স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ করায় তারা মনোক্ষুণ্নতা প্রকাশ করেছেন বলে জানান ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, সবাই চান সত্যিকারের স্থানীয় সরকার যেন প্রতিষ্ঠিত হয়। তারা সংসদ-সদস্য এবং কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত যেন হয় সেটা চেয়েছেন। উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদ বিলুপ্ত করে নারীদের অন্যভাবে নির্বাচন করা দরকার। সবাই দাবি করেছেন স্থানীয় সরকার যেন শক্তিশালী হয়। তারা যে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, মানুষের জীবনমান উন্নয়নে যেন ভূমিকা রাখতে পারেন, এজন্য জাতীয় সংসদের মতো স্থানীয় নির্বাচনেও যেন ভালো ব্যক্তিরা আসতে পারেন, যার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার শক্তিশালী হবে। প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার ব্যাপক দাবি উঠেছে।

জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদ ভবনে এসে সম্মানিত বোধ করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এই সুন্দর ভবনে যেন কখনোই আর অসুন্দর ব্যক্তিরা প্রবেশ করতে না পারেন সেই কথাও বলেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কমিশন কাজ শেষ করবে। আমরা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে শেষ করতে চাই। শেষ পর্যন্ত আমরা প্রস্তাব নেব।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন (বুলবুল) বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ চাই। কমিশন যেন কঠোর হয়। আমরা মতামত দিয়েছি, যেন অল্প সময়ের মধ্যে ভোট দিতে পারে। রিটার্নিং কর্মকর্তা ইসি কর্মকর্তা যেন হয়। আমরা ডিসি বা ইউএনওকে চাই না। নির্বাচনের সময় বিচার বিভাগ ছাড়া সব ইসির নিয়ন্ত্রণে চাই। আমরা তাড়াতাড়ি নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছি।

সূত্র জানায়, বৈঠকে জনপ্রতিনিধি ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত এসেছে। অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে-দিনের ভোট যেন রাতে না হওয়া; আগের সরকারের আমলের কেউ যেন পুনর্বহাল হতে না পারে; সংরক্ষিত নারী আসনে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে ভোট; মেয়রের ক্ষমতা কমানোর জন্য প্যানেল থেকে একজন পুরুষ ও একজন নারীকে স্বাক্ষরের ক্ষমতা দেওয়া; উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানদের ক্ষমতায়িত করা; ভোটের সময় আঙুলের ছাপ নেওয়া, যাতে একজনে ভোট আরেকজন দিতে না পারে; স্থানীয় সরকারের জন্য সমন্বিত আইন করা এবং কোনো ভোটার তার নির্বাচনি এলাকার বাইরে অবস্থান করলে, এমনকি প্রবাসে থাকলেও ই-ভোটিংয়ের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ রাখা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ