সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন

পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল, জনগণকে অভিনন্দন জানাল জামায়াত

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ২ প্রদর্শন করেছেন

দেশের উচ্চ আদালতের রায়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের মাধ্যমে জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হওয়ায় বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বলেন, ‘২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের ভোট ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছিল। এই সংশোধনীর মাধ্যমে বিনা ভোটে ক্ষমতা দখলের প্রবণতা তৈরি হয়। ফলে গত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। নির্বাচনের নামে তামাশা হয়েছে মাত্র। মূলত পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আজ (১৭ ডিসেম্বর) দেশের উচ্চ আদালতের রায়ে জনগণের অধিকার পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হলো। এটি জনগণের আরেকটি বিজয়। আমরা দেশবাসীকে এই আইনি লড়াইয়ে জনগণের ভোটাধিকার পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় আন্তরিক অভিনন্দন ও মোবারকবাদ জানাচ্ছি।’

প্রসঙ্গত, সংবিধানের যে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ করা হয়েছিল, তার কিছু অংশ বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, সংসদীয় কার্যপ্রণালীর ১৪২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এটি যথাযথ হয়নি। এর ফলে দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের বিধান বাতিল হয়ে গেল। তার জায়গায় ফিরল নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা।

আজ (১৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, পঞ্চদশ সংশোধনী ছিল সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংক্ষিপ্ত রায়ের পরিপন্থি।

এর আগে পৃথক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে জারি করা রুলের রায় ঘোষণা করার জন্য ১৭ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ।

৪ ডিসেম্বর একই বেঞ্চে এ সংক্রান্ত শুনানি শেষ হয়। আদালতে এদিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও শাহরিয়ার কবির।

২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাস হয় এবং রাষ্ট্রপতি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তাতে অনুমোদন দেন। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

এছাড়া জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়, সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বহাল এবং রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করা হয়।

এই সংশোধনী বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্টজন। গত ১৯ আগস্ট হাইকোর্ট রুল জারি করেন। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে।

পরে এই রুল সমর্থন করে সহায়তাকারী (ইন্টারভেনার) হিসেবে যুক্ত হন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও গণফোরাম প্রমুখ। এছাড়া মো. মোফাজ্জল হোসেন নামে এক মুক্তিযোদ্ধাও রিট করেন।

শুনানিতে রিট আবেদনকারী, বিএনপি, রাষ্ট্রপক্ষ, জামায়াত, গণফোরাম, ব্যক্তি ও সংস্থার পক্ষে তাদের আইনজীবীরা বক্তব্য তুলে ধরেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ