সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:২৮ অপরাহ্ন

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে শিশু বিশেষজ্ঞদের অবস্থান কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ২ প্রদর্শন করেছেন

জেনারেল পেডিয়াট্রিকস (শিশু) ও পেডিয়াট্রিক সাব-স্পেশালিটির বিশেষজ্ঞদের দীর্ঘ পদোন্নতি জটের প্রতিবাদে চার দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

বুধবার বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) উদ্যোগে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মূল ফটকে এ অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। এতে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চিকিৎসকরা অংশ নেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসাসেবার অপরিহার্য অংশ শিশুস্বাস্থ্য। প্রত্যেক উপজেলা, জেলা সদর এবং মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ শিশু চিকিৎসকদের মাথাপিছু রোগীর চাপ অত্যন্ত বেশি। স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক যতগুলো পুরস্কার পেয়েছে তার অধিকাংশই শিশুস্বাস্থ্য বিষয়ে। এমনকি চিকিৎসাসেবার মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে যে অর্জন তার সবটুকু এসেছে শিশুস্বাস্থ্য সেবায়। সময়োপযোগী আধুনিক চিকিৎসা ও রোগ প্রতিরোধকারী ইপিআই টিকাদানে শিশুমৃত্যু রোধে সাফল্যের কারণে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ থেকে গুটিবসন্ত ও পোলিও নির্মূল হয়েছে।

তারা বলেন, ২০২৩ সালে প্রায় ৩৬ লাখ ২ হাজার ৫০৯ জন শিশু জন্মগ্রহণ করে। এর মধ্যে হাসপাতালে জন্ম নেয় ২৩ লাখ ৪০ হাজার ১৮২ জন শিশু। ২০১৭ সালে পাঁচ বছরের নিচের শিশু মৃত্যু ছিল প্রতি হাজারে ৪৫ জন। ২০২২ সালে শিশু বিশেষজ্ঞদের প্রচেষ্টায় তা কমে ৩১-এ উন্নীত হয়েছে। ২০৩০ সালের এসডিজি লক্ষ্য হলো ২৫।

বক্তারা বলেন, বর্তমানে সরকারি ৩৭টি মেডিকেল কলেজে সমন্বিত শিশু স্বাস্থ্যসেবা দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। এ ছাড়া মেডিকেল কলেজে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে আনুপাতিক হারে। পুরনো মেডিকেল কলেজগুলোতে বর্তমানে ২৫০ জন ছাত্রছাত্রী আছে ও নতুন মেডিকেলগুলোতে ৫০ জন করে ছাত্রছাত্রী প্রতিবছর যোগ হয়। উপজেলা, জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবাদানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হলেন জুনিয়র ও সিনিয়র কনসালটেন্ট। সারা দেশে প্রায় ৬৩৮টি হাসপাতালে শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা দেন শিশু ও  নবজাতকসহ অন্য সাব-স্পেশালিটির বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু এ খাতে কর্মরত চিকিৎসকরা অবহেলিত।

এ সময় তারা বৈষম্য নিরসনে চার দফা দাবি উপস্থাপন করেন।সেগুলো হলো–

১. পেডিয়াট্রিকস জুনিয়র কনসালটেন্ট, সিনিয়র কনসালটেন্ট, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, অধ্যাপক, মেডিসিন, সার্জারি ও গাইনি অ্যান্ড অবসের সঙ্গে সমতা আনতে ওএসডি অ্যাটাচমেন্ট/ইনসিটু পদোন্নতি প্রদান প্রয়োজন।

২. পদের অতিরিক্ত পদোন্নতি ও পদায়ন এবং প্রয়োজনে ওএসডি অ্যাটাচমেন্ট/ইনসিটু পদায়ন। এ সমস্যার সমাধান না করলে নিকট ভবিষ্যতে অপূরণীয় ক্ষতিসাধন হবে। এতে দেশের কোটি কোটি শিশু স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়বে ও শিশু মৃত্যু বাড়বে।

৩. জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ শিশু হলেও সরকারি হাসপাতালের শয্যা সংখ্যার মাত্র ১৩ শতাংশ শিশুদের জন্য বরাদ্দ। সরকারি হাসপাতালে শিশু রোগীদের সংখ্যার অনুপাতে হাসপাতালে বিছানার সংখ্যা বর্ধিতকরণ ও চিকিৎসকদের জন্য নতুন পদসৃষ্টি করতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের অনুপাতে শিক্ষকদের পদ সৃষ্টি এবং পরবর্তীতে ইনসিটু পদোন্নতি প্রদানকারী চিকিৎসকদের সৃষ্ট করা পদে আত্তীকরণ।

৪. ঢাকায় একটি আন্তর্জাতিক মানের সরকারি বিশেষায়িত ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব চাইল্ডহেলথ’ স্থাপন করা, যেখানে শিশু মেডিসিন, সাব-স্পেশালিটি ও সার্জারির সমন্বিত চিকিৎসা প্রদান করা।

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বিপিএ আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মেসবাহ উদ্দিন আহম্মেদ, সদস্যসচিব ডা. মো. বেলায়েত হোসেন ঢালী, সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. জিয়াউর রহমান চৌধুরী, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের বিভাগীয় প্রধান (শিশু) অধ্যাপক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এএসএম মাহমুদুজ্জামান প্রমুখ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ