ইসরাইলি সামরিক এবং নিরাপত্তা সূত্র স্বীকার করেছে যে, তারা ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ গোষ্ঠীর নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন প্রতিহত ও ধ্বংস করতে ব্যর্থ হয়েছে।
ইসরাইলের শীর্ষ প্রতিরক্ষা নীতি বিশেষজ্ঞ রন বেন-ইশাই শনিবার রাই আল-ইয়াম পত্রিকাকে জানিয়েছেন, ইয়েমেনের যে ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্প্রতি তেলআবিবে আঘাত হেনেছে, সেটি এমন একটি অবস্থান থেকে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, যেখানে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কার্যত অকার্যকর ছিল।
বেন-ইশাই ইসরাইলি নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে আরও বলেছেন, এখন প্রধান প্রশ্ন হলো- কেন ইসরাইলের বিমান প্রতিরক্ষা স্তরগুলো ইয়েমেনের ওই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত ও ধ্বংস করতে ব্যর্থ হলো।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, তেলআবিবে সর্বশেষ হামলাটি ইসরাইলের ধারাবাহিক পরাজয়ের উদাহরণ মাত্র। এটি ইসরাইলের বেসামরিক কেন্দ্র এবং সামরিক স্থাপনা উভয়কেই সুরক্ষা দেওয়ার জন্য গঠিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যর্থতাকে জোরালোভাবে স্পষ্ট করে দিয়েছে।
এর আগে ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী ঘোষণা দেয় যে, তারা ‘প্যালেস্টাইন-২’ একটি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে নিক্ষেপ করেছে। এটি দখলকৃত ইয়াফার একটি ইসরাইলি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে।
এই হামলাটি ফিলিস্তিনের সংগ্রামের প্রতি সমর্থন এবং গাজার চলমান গণহত্যার প্রতিক্রিয়ায় পরিচালিত হয়েছে।
ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারে শনিবার নিশ্চিত করেছেন যে, অভিযানটি তার লক্ষ্য অর্জন করেছে। এ সময় তিনি ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইয়েমেনের সামরিক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি জানান, এই অভিযানটি ‘প্রতিশ্রুত বিজয় ও পবিত্র জিহাদ’র পঞ্চম ধাপের অংশ। তিনি আরও জানান যে, ক্ষেপণাস্ত্রটি নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে, কেননা ইসরাইলি বাহিনী (আইওএফ) এটি প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এদিকে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী স্বীকার করেছে যে, তারা ইয়েমেন থেকে উৎক্ষেপিত ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রটি তেলআবিবে আঘাত হানে, যার ফলে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি সাধন হয়।
ইসরাইলি গণমাধ্যম জানায়, ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের স্থানে আগুন ধরে যায় এবং বেশ কয়েকজন আহত হন।
মেডিকেল সূত্রের বরাতে ইসরাইলি গণমাধ্যম জানায়, এই হামলায় দখলদার বাহিনীর অন্তত ১১ জন সদস্য আহত হয়েছেন।
তেলআবিব থেকে উত্তর অশদোদ পর্যন্ত এলাকায় সাইরেন বাজানো সত্ত্বেও, ইসরাইলের আয়রন ডোম এবং ডেভিড’স স্লিং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্ষেপণাস্ত্রটি থামাতে ব্যর্থ হয়।
দখলদার পুলিশের বিবৃতিতে ক্ষেপণাস্ত্রটির তেলআবিবে আঘাত এবং এর ফলে সৃষ্ট ক্ষতির কথা নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা জানায়, এই ব্যর্থতার কারণ নির্ধারণের জন্য একটি তদন্ত শুরু করা হবে।
এদিকে এই সাফল্য ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর সামরিক সক্ষমতার একটি স্পষ্ট উদাহরণ। যা দখলদার ইসরাইলিদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। সূত্র: ইরনা ও আল-মায়াদিন