লক্ষ্মীপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে রাশেদ আলম নামে এক যুবক কাঠ দিয়ে তার ফুফাতো বোন শেফালী বেগম ও ভাবনা আক্তারকে মারধর করে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
পরে ঘটনাটি নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে রাশেদের নামে মামলা হয়। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
সোমবার দুপুরে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রোববার দুপুরে সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের পশ্চিম সৈয়দপুর গ্রামের সাহাদুল্লাহ হাজী বাড়িতে রাশেদ তার ফুফাতো বোনদের পিটিয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মাদক সেবনের কারণে রাশেদ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার দাবি, তার মানসিক রোগের সনদ রয়েছে। এছাড়া সে নিজেকে লাহারকান্দি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিত।
১৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে দেখা যায়, লোকজনের সামনেই এক নারীকে কাঠ দিয়ে মারধর করছে রাশেদ। তাকে উপস্থিত লোকজন আটকানোর চেষ্টা করছিল।
গ্রেফতার রাশেদ সাহাদুল্লাহ হাজী বাড়ির মৃত মাহবুবুল ইসলামের ছেলে। সে মাদকাসক্ত ও মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত। এছাড়া আওয়ামী লীগ-বিএনপির লোকজনকে ম্যানেজ করে জোরপূর্বক স্থানীয় কৃষকদের জমির মাটি বিক্রি করত বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী ভাবনা আক্তার গণমাধ্যমকে জানান, ২০০৩ সালে নানার বাড়িতে আমার মা ফাতেমা আক্তার জমি কেনেন। ওই জমি রাশেদ অন্য একজনের কাছে বিক্রি করে দেয়। সেখানে ঘর করতে গেলে আমিসহ আমার খালাতো বোন শেফালীকে বাধা দেয়। এতে রাশেদ তাদের কাঠ দিয়ে পিটিয়েছে। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে। তারা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
লাহারকান্দি ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক মো. তফসির বলেন, রাশেদ যুবলীগের কোনো দায়িত্বে ছিল না। কখনো তাকে কোনো প্রোগ্রামেও দেখিনি। এর আগে ছিল কিনা তা আমার জানা নেই। রাশেদ মাদকাসক্ত ও ইয়াবা বিক্রির সঙ্গে জড়িত। মাদক সেবনের কারণে কিছুদিন সে অসুস্থ ছিল। জমি দখল ও মাটি লুটসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে সে জড়িত রয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কয়েকজনকে ম্যানেজ করে সে অপকর্মগুলো করে আসছিল।
লাহারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন মহব্বত বলেন, রাশেদ খারাপ প্রকৃতির ছেলে। সে মাদক সেবন ও মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত। এলাকায় তার বিরুদ্ধ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।
সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, মারধরের ঘটনায় দুই নারী হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নেন। তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে চেষ্টা করেও রাশেদের পরিবারের কারও সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। পরে অভিযুক্ত রাশেদকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।