চট্টগ্রাম: এস আলম গ্রুপের ছয়টি কারখানা বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) থেকে বন্ধের নোটিশ দিয়েছেন এ শিল্পগ্রুপের মানব সম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন। তবে নিরাপত্তা বিভাগ, ডেলিভারি সেকশন ও জরুরি বিভাগগুলো ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খোলা থাকবে।
বন্ধ ঘোষণা করা এ ছয়টি কারখানা হলো এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ, এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড–নফ, এস আলম পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড ও ইনফিনিটি সি আর স্ট্রিপস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
এর মধ্যে দুটি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার কালারপুল, তিনটি ইছানগর ও একটি বাঁশখালীতে অবস্থিত।
নোটিশে বলা হয়েছে, বুধবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারখানা বন্ধ থাকবে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী কারখানা খোলার তারিখ নোটিশের মাধ্যমে জানানো হবে।
কারখানা বন্ধের নোটিশের খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রুপটির কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারা কারখানার সামনে জড়ো হয়ে প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা করেন।
এস আলম গ্রুপের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, মূলত কারখানার কাঁচামাল আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খুলতে না পারা এবং ব্যাংক হিসাবে জটিলতা তৈরি হওয়ায় কারখানাগুলোতে উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে কারখানাগুলোর সব শ্রমিকের বেতন স্বাভাবিক নিয়মে দেওয়া হবে। উৎপাদিত পণ্যের সরবরাহও মজুদ নিঃশেষ হওয়া পর্যন্ত চালু থাকবে।
সূত্র জানায়, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মো. সাইফুল আলম সম্পদ ও বিনিয়োগ নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ছয় মাসের সময় বেঁধে দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে বিষয়টির সমাধান না হলে আন্তর্জাতিক সালিসিতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও একাধিক উপদেষ্টার কাছে ‘বিরোধ নিষ্পত্তির নোটিশ’ পাঠিয়েছেন সাইফুল আলম। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। সংবাদমাধ্যমটির তথ্যমতে, ১৮ ডিসেম্বর দেওয়া এস আলমের ওই নোটিশে বলা হয়েছে, এই ক্ষতি আদায়ে সাইফুল আলম আন্তর্জাতিক আইনি প্রচেষ্টা শুরু করেছেন। তবে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে নন, সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে তার এই প্রচেষ্টা। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে ২০০৪ সালের দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তির কথা বলা হয়েছে নোটিশে।
এতে বলা হয়, এস আলমের পরিবার ২০১১ সাল থেকে সিঙ্গাপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে তারা দেশটির নাগরিকত্ব পেয়েছেন। ২০২০ সালে তারা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন।