রংপুরের কাউনিয়ায় মারা যাওয়ার পাঁচ বছর পর কবর থেকে মাংস বিক্রেতা মনজুম আলীর (৫২) লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট প্রত্যয় হাসেমের উপস্থিতিতে উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের নাজিরদহ গ্রামের কবরস্থান থেকে তার লাশ উত্তোলন করে সিআইডি পুলিশ।
নিহত মনজুম আলী হারাগাছ নাজিরদহ গ্রামের মৃত ফজল উদ্দিনের ছেলে।
মাংস বিক্রেতা মনজুমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার অভিযোগ এনে তার ছোট ভাই মনিরুজ্জামান (৩০) বাদী হয়ে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রংপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি পুলিশ। মামলার তদন্তের স্বার্থে এবং মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার মনজুমের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।
মামলার বাদী মনিরুজ্জামান বলেন, ঘটনার আগে আমার ভাই আসামিদের কাছে পাওনা টাকা চাইতে যায়। টাকা চাওয়ায় আসামিরা আমার ভাইয়ের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। পরে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি রাতে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে একতা ব্রিজের পাশে তিস্তার শাখা নদীর কাছে হত্যা করে। পরে রাতে লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি গ্রামের কয়েকজনকে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তাকে জানানো হয় তার ভাই নদীর পাড়ে জুয়া খেলার সময় লোকজনকে দেখে পালাতে গিয়ে তিস্তার শাখা নদীতে ডুবে মারা গেছে বলে প্রচার করা হয়েছে। পরে খোঁজখবর নিয়ে তিনি জানতে পারেন তার ভাই পানিতে ডুবে মারা যায়নি। তাকে হত্যা করে দুর্ঘটনা বলে প্রচার করা হয়েছে।
তবে আসামিরা তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ২০২০ সালে ভয়াবহ করোনার সময়ে জনসমাগম নিষিদ্ধ ছিল। ঘটনার রাতে ওই ব্যক্তি আরও কয়েকজনকে নিয়ে তিস্তার শাখা নদীর পাড়ে জুয়া খেলছিল। রাতের বেলায় গ্রামীণ সড়কে আলো দেখে প্রশাসনের গাড়ি ভেবে জুয়াড়িরা পালাতে গেলে সাঁতার না জানায় তিস্তার শাখা নদীতে ডুবে মারা যান ওই ব্যক্তি। খবর পেয়ে পুলিশ এসেছিল কিন্তু সেই সময় মৃতের পরিবার অভিযোগ করতে রাজি হয়নি। অথচ ঘটনার চার বছর পর প্রতিহিংসার আক্রোশে মামলা দায়ের করেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রংপুর সিআইডির এসআই গোলাম মাওলা রাব্বি বলেন, বাদী তার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ এনে উপজেলার নাজিরদহ গ্রামের নয়জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। হাসপাতালের মর্গে ফরেনসিক পরীক্ষা শেষে মরদেহ আবার কবরস্থ করা হবে।