রাজশাহীর বাগমারার তাহেরপুরে এক স্কুলশিক্ষককে আটক রেখে মারধর করে চাঁদা আদায় ও ফাঁকা স্ট্যাম্পে সই নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে দুই যুবককে আটক করেছে। তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ সোমবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন তাহেরপুর চৌকিরপাড়া গ্রামের শাহিনুর ইসলাম (২৯) ও আলমগীর হোসেন (২৫)। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও ধরার জন্য চেষ্টা করছে। তাহেরপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সোহাইল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মুক্তিপণের টাকা, সোনা ও চেক উদ্ধারের পাশাপাশি অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। দুপুর ১২টায় গ্রেপ্তার দুই যুবককে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষক মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তিনি স্ত্রীসহ তাহেরপুরে থাকতেন। তাঁকে মারধরে জড়িত যুবকেরা একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালানো হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হামিরকুৎসা ইউনিয়নের অর্জুনপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্কাছ আলীকে (সাধন) গত শনিবার রাতে অপহরণ করেন তাহেরপুর এলাকার শাহিনুর ইসলাম, আলমগীর হোসেনসহ ১০ তরুণ ও যুবক। তাঁকে তাঁরা অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁকে ঘরে আটক রেখে মারধর করেন অপহরণকারীরা। একপর্যায়ে তাঁর কাছে থাকা ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে বিকাশের মাধ্যমে পরিবারের কাছ থেকে আরও ১২ হাজার টাকা নেন অপহরণকারীরা। অপহরণকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের দুই ভরি সোনা, ৬০০ টাকা মূল্যের দুটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প এবং ফাঁকা চেকে সই নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অপহরণকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়ার পর বিষয়টি পুলিশকে জানান আক্কাছ আলী। গতকাল রোববার তিনি বাদী হয়ে সাতজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান দুই আসামিকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।
ওই শিক্ষকের স্বজনেরা জানান, আক্কাছ আলী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। গত ৫ আগস্টের পর তিনি প্রকাশ্যে চলাফেরা করতেন না। অপহরণকারীরা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। মারধরের শিকার হওয়ার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। মুঠোফোন বন্ধ করে রেখেছেন। এ কারণে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।