মহাকাশ ভ্রমণ দীর্ঘদিন ধরেই ব্যয়বহুল একটি উদ্যোগ। কারণ প্রচলিত রকেটগুলো একবার ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়া হতো। তবে, পুনঃব্যবহারযোগ্য রকেট প্রযুক্তির উদ্ভাবন এ প্রক্রিয়াকে করেছে সাশ্রয়ী, সক্ষম এবং টেকসই।
২০১৫ সালে স্পেসএক্সের ‘ফ্যালকন ৯’ রকেট প্রথমবারের মতো স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর ভূমিতে ফিরে আসে। এ সাফল্যের মধ্য দিয়ে মহাকাশ ভ্রমণের ব্যয় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়। রকেটগুলোতে উন্নত নেভিগেশন সিস্টেম ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করা হয়, যা অবতরণের সময় নির্ভুল গতিপথ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম।
স্পেসএক্সের পাশাপাশি অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের কোম্পানি ‘ব্লু অরিজিন’ তাদের ‘নিউ শেপার্ড’ রকেট দিয়ে মহাকাশ পর্যটনের ধারণাকে জনপ্রিয় করতে কাজ করছে। ২০২১ সালে যাত্রীদের নিয়ে সফল মিশন সম্পন্ন করে তারা।
এ রকেটগুলো শুধু খরচই কমাচ্ছে না, বরং পরিবেশবান্ধবও। প্রচলিত রকেটের মতো মহাকাশ বা সমুদ্রে আবর্জনা না ফেলায় এটি দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য এনে দিচ্ছে। নাসার ‘আর্টেমিস প্রোগ্রাম’-এর মতো প্রকল্পে চাঁদে মানুষ পাঠাতে পুনঃব্যবহারযোগ্য রকেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
যদিও রকেটগুলোর পুনঃব্যবহারের আগে বিভিন্ন পরীক্ষা ও মেরামত প্রয়োজন, তবে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া আরও নির্ভরযোগ্য হচ্ছে। স্পেসএক্স ইতোমধ্যে তাদের কিছু রকেট ১০ বারেরও বেশি ব্যবহার করেছে, যা এ প্রযুক্তির দক্ষতার অনন্য উদাহরণ।
এ অগ্রগতি বৈজ্ঞানিক গবেষণা, পৃথিবীর কক্ষপথে স্যাটেলাইট স্থাপন এবং ভবিষ্যতে অন্যান্য গ্রহে বসতি স্থাপনে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। পুনঃব্যবহারযোগ্য রকেট প্রযুক্তি মহাকাশ গবেষণার নতুন যুগের সূচনা করেছে। এটি মহাকাশকে সাশ্রয়ী এবং জনসাধারণের কাছে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসার পথে অগ্রগামী।