মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন

গাজার ফিলিস্তিনিদের জর্ডান ও মিশরে পাঠানোর আহ্বান ট্রাম্পের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ রবিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ২৬ প্রদর্শন করেছেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, জর্ডান ও মিশরকে গাজার ফিলিস্তিনিদের আরও বেশি সংখ্যায় গ্রহণ করা উচিত। ইসরাইলের হামাসবিরোধী যুদ্ধে সৃষ্ট মানবিক সংকটের সমাধান হিসেবে তিনি এই প্রস্তাব দেন।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইসরাইল।

ট্রাম্প জানান, তিনি জর্ডানের রাজা আবদুল্লাহর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং তাকে আরও ফিলিস্তিনি নেওয়ার অনুরোধ করেছেন।

তিনি বলেন, আমি রাজাকে বলেছি, আমি চাই আপনি আরও লোক নিন, কারণ গাজা এখন পুরোপুরি বিপর্যস্ত। আমি চাই তিনি কিছু লোক গ্রহণ করুন।

এছাড়া, ট্রাম্প জানান, তিনি একই বিষয়ে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গেও রোববার কথা বলবেন।

তিনি বলেন, আমি চাই মিশরও কিছু মানুষ গ্রহণ করুক। আপনি প্রায় ১৫ লাখ মানুষের কথা বলছেন, আর আমরা পুরো এলাকাটি খালি করে দিয়ে বলতে পারি—‘এটা শেষ।’

ট্রাম্প এই স্থানান্তরকে ‘অস্থায়ী বা দীর্ঘমেয়াদী’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, গাজার এলাকা ‘বহু শতাব্দী ধরে’ নানা সংঘাতের সাক্ষী হয়ে এসেছে।

তবে জর্ডান ও মিশর দীর্ঘদিন ধরে গাজার ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আসছে।  জো বাইডেনের অধীনে পূর্ববর্তী প্রশাসন এই প্রত্যাখ্যানকে মেনে নিয়েছিল।

ট্রাম্পের এই বক্তব্য ফিলিস্তিনিদের জাতিগত উচ্ছেদের ইঙ্গিত দিতে পারে, যা আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে বিবেচিত।

এই বক্তব্য ফিলিস্তিনিদের জন্য অত্যন্ত বিতর্কিত এবং এটি ইসরায়েলের কিছু কট্টরপন্থী রাজনীতিকদের ‘গাজা খালি করার’ পরিকল্পনার সঙ্গে মিলে যায়।

জর্ডান ও মিশর দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের গাজায় থাকার পক্ষে, কারণ তারা মনে করে এই ধরনের জাতিগত উচ্ছেদ ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধিকারের পরিপন্থি।

ট্রাম্প কার্যত গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দেওয়ার কথা বলছেন, যা রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং হামাস তা কখনো গ্রহণ করবে না।

এছাড়া গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জর্ডান বা মিশরে স্থানান্তরের যে কোনো পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সংকট সৃষ্টি করতে পারে।  এটি দীর্ঘমেয়াদে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের দখলদারিত্ব আরও জোরদার করতে পারে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী এজেন্সি অনুসারে, জর্ডানে মোট ফিলিস্তিনি শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় ২.৪ মিলিয়ন।  এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ গাজা উপত্যকা থেকে আগত শরণার্থী, বিশেষত যারা ১৯৪৮ এবং ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত হয়।  আনুমানিক গাজা থেকে প্রায় ৩ থেকে ৫ লাখ ফিলিস্তিনি জর্ডানে বসবাস করতে পারে।

আর মিশরে গাজার ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম, তবে হাজার হাজার গাজার শরণার্থী সেখানে থাকেন।  গাজার শরণার্থীরা সাধারণত অস্থায়ীভাবে মিশরে চলে আসে, বিশেষত যখন সংঘাত বৃদ্ধি পায়।  ২০২৩ সালের অক্টোবর ৭ তারিখে সংঘাত তীব্র হওয়ার পর গাজার অনেক বাসিন্দা মিশরে চলে এসেছেন, তবে এদের সঠিক সংখ্যা পাওয়া কঠিন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ