ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান পরোক্ষ আলোচনার ফলাফল নিয়ে গভীর সংশয় প্রকাশ করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। একই সঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘কড়া বার্তা’ দিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের কোনো ইস্যুতে আমরা অন্যের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করি না’।
সোমবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির প্রথম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে তেহরানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ পর্যন্ত চার দফা আলোচনা হয়েছে উভয় পক্ষে। এ প্রসঙ্গে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘আমরা ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে দেব না।’ এটি একটি বেহুদা কথা। ইরানের নিজস্ব নীতি ও পথ আছে এবং ইরান তা স্বাধীনভাবেই অনুসরণ করে যাবে’।
‘ইরান কারো অনুমতির অপেক্ষায় নেই। আমরা আমাদের রাস্তা নিজেরাই ঠিক করি’, যোগ করেন তিনি।
খামেনি স্পষ্টভাবে জানান, ‘আমরা মনে করি না যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে (পরমাণু) আলোচনা থেকে কোনো বাস্তব ফল আসবে। কী হবে— তা আমরা জানি না। তবে বিশ্বাস করি না যে, এতে কিছু অর্জিত হবে’।
যুক্তরাষ্ট্রের আসল উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যথাসময়ে আমি জনগণকে ব্যাখ্যা করব, কেন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা এতো জোর দিয়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করতে চায়। আমি পরিষ্কারভাবে জানাব—তাদের আসল উদ্দেশ্য কী’।
এদিকে, রোববার ওমানে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চতুর্থ দফার পরোক্ষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ইরানের পক্ষ থেকে এতে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি ছিলেন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।
ওমানের মধ্যস্থতায় হওয়া এই আলোচনাকে উভয় পক্ষই ‘অগ্রগতিশীল’ বলে বর্ণনা করেছে। আলোচনার মূল বিষয় ছিল—
• ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি,
• ২০১৫ সালের চুক্তির বিকল্প সম্ভাব্য সমঝোতা এবং
• যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার।
তবে এসব কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মধ্যেই সর্বোচ্চ নেতার এই বক্তব্য আলোচনার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
আয়াতুল্লাহ খামেনির বক্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে, ইরান কূটনীতির পাশাপাশি বিকল্প পথের প্রস্তুতিও বজায় রাখছে। ওমানে আলোচনা চললেও সর্বোচ্চ নেতৃত্বের এই স্পষ্ট সন্দেহ আগামীতে কূটনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনাকে কঠিন করে তুলতে পারে।
মূলত তেহরান থেকে রোম পর্যন্ত— পরমাণু ছায়ায় কূটনীতির এই পথচলা এখন আরও ঘন অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে। সূত্র: মেহের নিউজ