বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৮ অপরাহ্ন

১০ টাকা ভিজিটে ৪৫ বছর ধরে রোগী দেখছেন ডা. সুজিত

প্রতিবেদকের নামঃ
  • প্রকাশের সময়ঃ বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫
  • ১ প্রদর্শন করেছেন

পেশাদারিত্বের সঙ্গে দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে রামুর দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ডা. সুজিত কুমার শর্মা। তার এই কাজে রয়েছে মমতা ও মানবিকতার ছোঁয়া। নামমাত্র ১০ টাকা ভিজিট নিয়ে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন তিনি। ধনী-গরিব সব রোগীর কাছ থেকেই একই ভিজিট নিয়ে থাকেন তিনি। তবে অস্বচ্ছল রোগীদের কাছ থেকে ভিজিট নেন না; উপরন্তু বিনা টাকায় ওষুধ দিয়েও সহায়তা করেন। মানুষ তাকে ভালোবেসে তাকে ডাকছে গরিবের ডাক্তার নামে।

চিকিৎসা সেবায় নিজের ব্যক্তিগত লাভ-লোকসানের হিসাব করেন না ডাক্তার সুজিত। রোজ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। নাম মাত্র ১০ টাকার ভিজিট নেন রোগীদের কাছ থেকে।

ডা.সুজিত শর্মা কক্সবাজারের রামু উপজেলার পশ্চিম মেরংলোয়া গ্রামের শশাংক মোহন শর্মার ছেলে। পারিবারিকভাবে সম্ভ্রান্ত এবং শিক্ষিত পরিবারের সন্তান।

অভাব-অনটনের মাঝেও যেন চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হয় কেউ— এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে গত ৪৫ বছর ধরে পল্লী চিকিৎসক হিসেবে দরিদ্র মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন রামুর ডা. সুজিত কুমার শর্মা। সময়ের পরিক্রমায় অনেক কিছু বদলেছে, কিন্তু বদলায়নি তার দায়িত্ববোধ ও মানবসেবা। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় তার চিকিৎসা কার্যক্রম। রামু চৌমুহনী স্টেশনের উত্তর পার্শ্বে একটি চেম্বারেই চলে এই সেবা। দিনভর গড়ে ১৫০-২০০ রোগী আসেন তার কাছে। ১০ টাকার বেশি ফি নেন না। অনেক রোগী ফি না দিয়েই চলে যান। স্থানীয়রা ভালোবেসে তাকে ডাকেন গরিবের ডাক্তার নামে।

৬৫ বছরের বৃদ্ধা তফুরা খাতুন বার্ধক্যে ভুগছেন। তিনি জানান, তার কোনো সন্তানাদি নাই, এই ডাক্তার তার কাছে সৃষ্টিকর্তার অছিলাস্বরূপ। তার কাছ থেকে পয়সা নেন না, কথা বলেও শান্তি পান।

স্থানীয়রা বলছেন, আমরা অসুখে পড়লে ওনিই আমাদের শেষ ভরসা। ওনার চিকিৎসার প্রতি মানুষের মাঝে একধরনের বিশ্বাস কাজ করে। অনেক জটিল রোগীও তার কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে ভাল হচ্ছেন। দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম, কাটা-ছেঁড়া, টিউমারসহ ছোটবড় অনেক জটিল অপারেশনও সফলতার সহিত সম্পন্ন করেন। কারো কাছে টাকা নেই শুনলে উনি কখনো ফিরিয়ে দেন না।

ডা. সুজিত কুমার শর্মা বলেন, চিকিৎসা সেবা কোনো বিলাসিতা নয়, এটি মানুষের মৌলিক অধিকার। আমি চাই, গরিব মানুষ যেন চিকিৎসা না পেয়ে অসহায়ত্ববোধ না করেন।

ডা. সুজিত এর এই উদারতা ও নিষ্ঠার কারণে স্থানীয় সমাজে তিনি হয়ে উঠেছেন এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। শুধু চিকিৎসক হিসেবেই নয়, এক মানবসেবক হিসেবেও তার ভূমিকা প্রশংসনীয়। ইতোমধ্যে চিকিৎসা সেবায় অবদান স্বরূপ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কৃতও হয়েছেন এই মহান সেবক।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ