২০২০ সালে করোনাভাইরাস ছড়ানোর জন্য দিল্লির নিজামুদ্দিনের তাবলিগ জামাত কোনোভাবেই দায়ী নয় বলে জানিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। এ বিষয়ে দিল্লি পুলিশের করা মামলা খারিজ করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এতে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর দায়মুক্ত হলো তাবলিগ জামাত।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় আচমকা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল ভারত সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষেণ রেড্ডি পার্লামেন্টে জানিয়েছিলেন, দিল্লিতে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে তাবলিগ জামাত। কেন্দ্রীয় সরকারি নির্দেশ লঙ্ঘন করে নিজামুদ্দিনে তাবলিগ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দিল্লি পুলিশ যে ৭০ জন ভারতীয়র বিরুদ্ধে ১৬টি প্রাথমিক এফআইআর দায়ের করেছিল, হাইকোর্ট সব খারিজ করে দিয়েছেন। বিচারপতি নীনা বনসল কৃষ্ণা বলেছেন, দিল্লি পুলিশ কোনো অভিযোগই প্রমাণ করতে পারেনি।
তাবলিগ জামাতে অংশগ্রহণকারীরা শুরু থেকেই নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেছিলেন। তবে দিল্লি পুলিশ তা মানেনি। ১৬টি এফআইআরে ১৯৫ জন বিদেশি নাগরিকেরও নাম ছিল। তারা সে সময় তাবলিগ জামাতে যোগ দিতে ভারতে এসেছিলেন।
অভিযোগপত্রে ৭০ জন ভারতীয়র নাম ছিল। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির আওতায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়। কেউ কেউ জামাতে অংশগ্রহণকারীদের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন।
বিচারপতি নীনা বনসল কৃষ্ণা তার রায়ে দিল্লি পুলিশের সব অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে বলেন, ওটা ছিল এক অসহনীয় পরিস্থিতি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রত্যেকেই অসহায় হয়ে গৃহবন্দী থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, মারকাজে বাস করতে বাধ্য হয়েছিলেন মানুষজন। তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার অভিযোগ ধোপে টেকে না।
দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি নীনা বনসল কৃষ্ণা মামলা খারিজ করার সময় দিল্লি পুলিশের কাছে পাল্টা জানতে চান, হঠাৎ করে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। সেই অবস্থায় বিদেশি নাগরিকসহ আটকে পড়া জনতা আশ্রয়স্থল ছেড়ে কোথায় যেতে পারতেন? কীভাবেই–বা যেতেন?
তিনি বলেন, অভিযুক্তরা অতিমারি আইন অথবা বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের কোনো ধারা লঙ্ঘন করেননি। অপরাধ করেছেন এমন কিছু প্রমাণও করা যায়নি।