ভারতের পাঞ্জাবে ভয়াবহ বন্যায় রাজ্যজুড়ে এক ভয়ংকর দুর্যোগ দেখা দিয়েছে, যা গত চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় বন্যা বলে মনে করা হচ্ছে।
১৯৮৮ সালের পর থেকে এত বড় ক্ষয়ক্ষতির নজির পাওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রাজ্যের ২৩টি জেলা পানিতে তলিয়ে গেছে, প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত এবং দেড় হাজারেরও বেশি গ্রাম পানির নিচে চলে গেছে। হাজার হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে এবং অনেকেই ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। কোথাও কোথাও ৮ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত পানি জমে যাওয়ায় মানুষকে নৌকা দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। গুরুদাসপুর, পাঠানকোট, তরণ, ফিরোজপুর ও অমৃতসর জেলাগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফসলি জমির বিরাট অংশ নষ্ট হয়ে গেছে, সরকারের হিসাব অনুযায়ী অন্তত ১.৪৮ হেক্টর জমির ফলন সম্পূর্ণ ধ্বংস। অব্যাহত বৃষ্টিতে আরও বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভাগবত মান ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আহ্বান জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই বিনোদন জগতের অনেক তারকা পাশে দাঁড়িয়েছেন। গায়ক দিলজিৎ দোসাঞ্জ গুরদাসপুর ও অমৃতসরের অন্তত ১০টি গ্রাম দত্তক নিয়েছেন এবং ত্রাণ কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছেন।
এদিকে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে হিমাচল প্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখেও দুর্যোগ তৈরি হয়েছে, বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। আবহাওয়া দপ্তর সতর্কতা জারি করে জানিয়েছে, উত্তর পাঞ্জাব, হরিয়ানা, পূর্ব রাজস্থান, দক্ষিণ-পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, উত্তর-পশ্চিম ও পূর্ব মধ্যপ্রদেশ এবং ওড়িশাতেও তীব্র বৃষ্টির ঝুঁকি রয়ে গেছে।
পাঞ্জাবে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে সরকার সব স্কুল ও কলেজ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে এবং সেনা ও দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীকে কাজে নামানো হয়েছে। মানুষের দুর্দশা লাঘবে প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা চালালেও এখনো প্রকৃতির নির্মম আঘাত থেকে মুক্তি মিলছে না।