রাজনৈতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার দিল্লি সফর। বৃহস্পতিবার তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে বসে রাজ্যের চারটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলে ধরেন।
এর মধ্যে রয়েছে- আলাদা অল ইন্ডিয়া সার্ভিস ক্যাডার, খাসিয়া ও গারো ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফশিলে অন্তর্ভুক্তি, ইনার লাইন পারমিট বা আইএলপি কার্যকর করা এবং প্রয়াত পিএ সাংমার নামে দিল্লিতে একটি সড়কের নামকরণ।
তবে শুধু দাবির পরিসরে সীমাবদ্ধ না থেকে এ বৈঠককে কেন্দ্রীয় সরকার, বিশেষ করে বিজেপির উত্তর-পূর্বাঞ্চল নিয়ে কৌশলগত সতর্কতার অংশ হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী সাংমা স্পষ্ট করেছেন যে, যৌথ আসাম-মেঘালয় ক্যাডার রাজ্যের জন্য কার্যকর নয়। আলাদা ক্যাডার থাকলে রাজ্যের জন্য নির্দিষ্ট আমলা পাওয়া যাবে, যা প্রশাসনিক কাজে দক্ষতা আনবে।
পাশাপাশি তিনি জোর দিয়েছেন খাসিয়া ও গারো ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতির ওপর। তার মতে, সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষা ও মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য এ স্বীকৃতি জরুরি।
তিনি আরও বলেছেন, বিধানসভা ইতোমধ্যেই এ প্রস্তাব পাস করেছে এবং কেন্দ্রের কাছে বারবার অনুরোধ করা হয়েছে।
বৈঠকে সবচেয়ে আলোচিত দাবি ছিল আইএলপি। সীমান্তবর্তী রাজ্যে বহিরাগত প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে এটি কার্যকর ব্যবস্থা বলে মনে করেন মেঘালয় মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি জানান, সীমান্তের কারণে অবৈধ অনুপ্রবেশের আশঙ্কা বাড়ছে এবং এ পরিস্থিতিতে রাজ্যের মানুষের নিরাপত্তা ও স্বার্থ রক্ষার জন্য আইএলপি বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
বৈঠকে সাংমা প্রয়াত পিএ সাংমার স্মৃতিকে তুলে ধরে দিল্লিতে তার নামে সড়ক নামকরণের প্রস্তাব দেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ দাবিগুলোর মধ্য দিয়ে স্পষ্ট যে উত্তর-পূর্বে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষায় চাপ বাড়ছে। একইসঙ্গে বিজেপিও এ অঞ্চলে নিজের প্রভাব বজায় রাখতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে। ফলে অমিত শাহ–কনরাড সাংমা বৈঠককে কেবল একটি রাজ্যভিত্তিক আলোচনা হিসেবে নয়, বরং উত্তর-পূর্বে কেন্দ্রীয় রাজনীতির নতুন মাত্রা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বৈঠকের পর, কেন্দ্র দ্রুত এসব দাবিতে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা।