মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:১২ পূর্বাহ্ন

কখনোই পারমাণবিক বোমা না বানানোর ঘোষণা ইরানি প্রেসিডেন্টের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১৭ প্রদর্শন করেছেন

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ঘোষণা দিয়েছেন, তেহরান কখনোই পারমাণবিক বোমা বানাবে না।  বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

মাসুদ পেজেশকিয়ানের এই ঘোষণা এমন সময়ে এলো, যখন যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির (ই-থ্রি) ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনরায় কার্যকর করার ৩০ দিনের প্রক্রিয়া আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর শেষ হতে যাচ্ছে।

এই তিন দেশ অভিযোগ করেছে, তেহরান ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।

ই-থ্রি জানিয়েছে, ইরান যদি জাতিসংঘ পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার পুনঃস্থাপন করে, সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত নিয়ে উদ্বেগ দূর করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয়, তবে ছয় মাস পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হবে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জাতিসংঘে পেজেশকিয়ানের সঙ্গে বৈঠকের পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ লিখেছেন, ‘চুক্তি এখনও সম্ভব। মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। ইরানের এখন আমাদের উত্থাপিত যৌক্তিক উদ্বেগগুলোর জবাব দেওয়া দরকার।’

ইরান এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে সরে যাওয়া এবং এর পর দেশটির ওপর বিমান হামলাকে দায়ী করে জানিয়েছিল, এসব কারণেই তারা আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করা কমিয়েছে।

পেজেশকিয়ান অভিযোগ করেন, ইউরোপীয়রা ভণ্ডামি করছে। তিনি বলেন, ‘তারা নিজেদের সৎ পক্ষ হিসেবে দেখালেও বাস্তবে আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টাকে ছোট করে দেখিয়েছে। তারা আসলে যুক্তরাষ্ট্রের ইশারায় কাজ করছে। ‘

জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে তিনি আরও বলেন, ইউরোপীয়রা আইনি বাধ্যবাধকতা এড়িয়ে গেছে এবং ইরানের আইনসঙ্গত পদক্ষেপগুলোকে ভ্রান্তভাবে ‘চুক্তি ভঙ্গ’ হিসেবে উপস্থাপন করেছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার দেওয়া ভাষণে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি আবারও বলেছেন, তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চাইছে না। তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করেছেন।

মূলত নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে ইরানের বিদেশি সম্পদ জব্দ হবে, অস্ত্র চুক্তি বন্ধ হয়ে যাবে এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিও কঠোরভাবে সীমিত করা হবে।

বুধবারের ভাষণে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের আকস্মিক হামলার নিন্দা করেন, যা ১২ দিনের যুদ্ধের সূচনা করেছিল। এতে ইরানের বহু জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন এবং দেশটির প্রতিরক্ষা দুর্বল হয়ে পড়ে।

তিনি জানান, ইসরাইলের বিমান হামলায় এক হাজারের বেশি ইরানি নিহত হয়েছেন এবং দেশটির সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করা হয়েছে।

পেজেশকিয়ান বলেন, ‘দেশপ্রেমিক ও সাহসী ইরানি জনগণ দেখিয়ে দিয়েছে, আগ্রাসনের সামনে কখনোই মাথা নত করবে না। ‘

তিনি আরও বলেন, তেল আবিব প্রকাশ্যে ‘গ্রেটার ইসরাইল’ পরিকল্পনার কথা বলছে, যা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে ‘বাফার জোন’ তৈরির কৌশল।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘প্রায় দুই বছরের গণহত্যা, গণ-অনাহার, দখলকৃত ভূখণ্ডে বর্ণবৈষম্য এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর বিরুদ্ধে আগ্রাসনের পরও ইসরাইল এখনো এই অবাস্তব ও দুঃসাহসী পরিকল্পনা চালিয়ে যাচ্ছে। ‘

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ