নির্বাচনের আগে ভয়ঙ্কর এক প্রকল্পের বিষয়টা ফাঁস হয়ে যাবে, গোপন থাকবে না- বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।
সম্প্রতি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন জরিপের বিষয়ে দৈনিক যুগান্তরকে দেওয়া এক সক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। সক্ষাৎকার নিয়েছেন যোবায়ের আহসান জাবের।
সামান্তা শারমিন বলেন, এবারের নির্বাচন হবে সব ধরনের সমীকরণকে ঘুরিয়ে দেওয়ার নির্বাচন। সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের এনজিও প্লাটফর্ম নিজেদের মতো করে পোল ঠিক করছে যে, নির্বাচনে কে জিতবে। আপনি যদি এই প্লাটফর্মগুলোর ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করেন, তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখতে পাবেন, তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই পোলগুলো তৈরি করেছে এবং অনেক ক্ষেত্রে পোলগুলো করানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের কিছু দুর্বলতা থাকতে পারে, আমরা একটি নতুন দল, সাংবিধানিক জায়গা থেকে পরিবর্তন হতে একটু বেশিই সময় লাগবে। আমাদের সাংগঠনিক কাঠামো ও প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করছি, যাতে যে কোনো ঝড়ে এটা টিকে থাকতে পারে। এই কাঠামো তৈরি কারার জন্য আমাদেরকে সময় দিতে হচ্ছে।
এনসিপির এই নেত্রী বলেন, আমরা যে পরিসংখ্যান দেখছি, এটি গুরুত্বপূর্ণ হবে না সামনে নির্বাচনে। সামনের নির্বাচন হবে সব ধরনের ধারণাকে ঘুরিয়ে দেওয়ার নির্বাচন।
তিনি বলেন, এই নির্বাচনটা প্রথমত ষড়যন্ত্রমূলক। সেখানে রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ এবং সেই সঙ্গে যোগ দিয়েছে জামায়াত। এর সঙ্গে কোনো কোনো রাজনীতিক ও ইন্টারন্যাশনাল পক্ষ যোগ দিয়েছে- এগুলোও হয়তো বের হবে।
আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, এক ধরনের প্রকল্প বাংলাদেশকে পুরানো ইস্টাবলিশমেন্টে রাখার প্রক্রিয়া, এই নির্বাচনকে দেখানো হচ্ছে। আমার কাছে মনে হয় নির্বাচনের আগ মুহূর্তে হলেও এই প্রকল্পটা ফাঁস হয়ে যাবে এবং এই প্রকল্পটা আর গোপন রাখতে পারবে না ওরা।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান বাংলাদেশে ৬০ শতাংশ তরুণ, এতো বেশি তরুণ তো বাংলাদেশ ফেস করেনি। ভোটিং যে একটা শক্তি, গত ১৫ বছর ভোট না দেওয়ার কারণে মানুষের মধ্যে এক ধরনের উপলব্ধি হয়েছে। এবারের ভোট এক ধরণের প্রতিবাদ, এক ধরনের জানান দেওয়া তার রাজনৈতিক সত্ত্বার, এবারের ভোট সে কোনোভাবেই ব্যবহৃত হতে দেবেন না। এক ধরনের প্রতিজ্ঞা থেকে তরুণরা তাদের ভোট দিয়ে একটা পরিবর্তন নির্ধারণ করবে।
সামান্তা শারমিন বলেন, আমরা দেখছি ভাসমান ভোটারের সংখ্যা সব থেকে বেশি। আমাদের দেশে রাজনৈতিক ভোটারের থেকে ভাসমান ভোটারের সংখ্যা বেশি। তারা কিন্তু ভোটের আগের রাত পর্যন্ত দেখবেন- কার কি অবস্থান, কে কি বলছেন। প্রথাগত রাজনৈতিক নেতারা এমন সব মন্তব্য করছেন আওয়ামী লীগকে নিয়ে আসার, জাতীয় পার্টিকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করার, তাতে যে ছেলেটা রাস্তায় আওয়ামী লীগের পুলিশের গুলি খেয়েছে, সেই ছেলেকে আপনি কখনোই বোঝাতে পারবেন না যে, জাতীয় পার্টি নির্বাচন করলে ভালো হয়। এটা যে গণতন্ত্র এটা কখনো বোঝাতে পারবেন না। ফলে বিএনপি ক্রমাগত তাদের ভোট হারাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপির নেতারা যখনই কোনো বক্তব্য দিচ্ছেন, তাদের রাজনৈতিক অবস্থা প্রকাশ করছেন, তখনই তাদের ভোট কিন্তু কমে যাচ্ছে। সেই জায়গা থেকে আমার মনে হয়, সামনে যে নির্বাচন সেটার ক্ষেত্রে অবশ্য এ ধরনের প্রকল্প কোনো ভূমিকা রাখবে না।