সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৩৮ পূর্বাহ্ন

ড্যাপ সংশোধনীর খসড়া অনুমোদন, কী আছে প্রস্তাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১৮ প্রদর্শন করেছেন

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বিস্তারিত এলাকা পরিকল্পনা বা ড্যাপের কিছু নির্দেশনার সংশোধনী প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে ড্যাপ (২০২২–২০৩৫) রিভিউ সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি।

এই সংশোধনীর ফলে ফ্লোর এরিয়া রেশিও (ফার) ও জনঘনত্ব বাড়ানো হচ্ছে, তবে কৃষিজমিতে যেকোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

রোববার (১৯ অক্টোবর) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারের সভাপতিত্বে রাজউক প্রণীত ড্যাপ বাস্তবায়ন মনিটরিং ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশোধনীর সুপারিশ প্রণয়ন সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজকের সভায় অনুমোদনের ভিত্তিতে শিগগিরই ড্যাপ (২০২২-২০৩৫) গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে।

এ সভায় উপস্থিত ছিলেন- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

ড্যাপের ফার ও জনঘনত্ব, বন্যা প্রবাহ অঞ্চল ও কৃষি ভূমি সংরক্ষণের বিষয়াদি পর্যালোচনা করে পরিবেশ সংবেদনশীলতাকে গুরুত্ব দিয়ে বিধানাবলী সংশোধনীর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এ সংশোধনী অনুযায়ী রাজউক আওতাধীন প্রায় সব এলাকায় ফার ও জনঘনত্ব বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া বিদ্যমান ড্যাপের (২০২২-২০৩৫) কৃষি জমিতে সীমিত পরিসরে নাগরিক পরিষেবা নির্মাণের অনুমোদন ছিল; যা বর্তমান সংশোধনীতে বাতিল করা হয়েছে।

এছাড়া বিদ্যমান ড্যাপে (২০২২-২০৩৫) উল্লিখিত মুখ্য জলস্রোত ও সাধারণ জলস্রোত পৃথকভাবে থাকলেও বর্তমান সংশোধনীতে একত্রীতভাবে “বন্যা প্রবাহ অঞ্চল” নামে পরিবর্তিত হবে। যেখানে সকল ধরনের স্থাপনা নির্মাণ নিষিদ্ধ হবে। এছাড়াও TOD, Regeneration, ব্লক ভিত্তিক উন্নয়নের উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে ফার প্রণোদনার সুপারিশ করা হয়েছে।

এ ছাড়াও বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (২০২০) এবং ড্যাপের (২২-৩৫) সমন্বয় করে শহর উন্নয়নের প্রাবল্যতার সাথে যুগোপযোগীকরণের লক্ষ্যে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা সংশোধনীর অনুমোদন করেছে।

ইমারতের ব্যত্যয় নিয়ন্ত্রণে (যেমন- অতিরিক্ত ভয়েড স্পেস, সেটব্যাক, ভূমি আচ্ছাদন, জনঘনত্ব) ইত্যাদি) বিধি বিধানের সংশধন, পরিমার্জন ও বিল্ডিং কোডের সাথে সমন্বয় করা হয়েছে।

এছাড়া দুর্যোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নির্মাণ অনুমোদকালে স্থাপত্য নকশার পাশাপাশি কাঠামাগত ও অন্যান্য নকশা অনুমোদনের বিধান রয়েছে। এছাড়াও গ্রাহক হয়রানির লাঘবে বিশেষ ও বৃহতদায়তন প্রকল্পের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে না, নির্মাণ অনুমোদন সুপারিশ প্রাপ্তির পরে অনুমোদন ফি জমা প্রদান করতে হবে, ভবন নির্মাণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে পাঁচ কাঠা বা তদুর্ধ আয়তনের জমির জন্য sewerage treatment plant (STP) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, গ্রীন বিল্ডিং প্রণোদনা প্রদান, আপিল কমিটি গঠন ইত্যাদি বিষয় সংযোজন/পরিমার্জন করা হয়েছে।

বিগত ১৯ মার্চ ২০২৫ খ্রিঃ তারিখে ড্যাপ রিভিউ সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভায় সংশোধনী প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হলে পুনরায় যাচাইয়ান্তে উপস্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়। উক্ত নির্দেশনার আলোকে রাজউক ও মন্ত্রণলায়ে বিভিন্ন অংশীজনের সাথে কমবেশি ৩৫টি সভা করে চূড়ান্ত খসড়া আজ সভায় উপস্থাপন করা হয়।

আজকের সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজ, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলামসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের প্রতিনিধিরা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ