১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ঢালিউডের ক্ষণজন্মা অভিনেতা সালমান শাহের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার অকালমৃত্যু নিয়ে তৈরি হওয়া রহস্যের জট এবার হত্যা মামলার তদন্তের মাধ্যমে খুলবে কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে আছে পুরো দেশবাসী। এর আগে সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় পিবিআই বলেছিল— হত্যা নয়, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছিলেন। পিবিআই নিরপেক্ষ তদন্ত করেনি—দাবি করে ২০২১ সালে নারাজি দিয়েছিলেন সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী।
সম্প্রতি সালমান শাহের মৃত্যুকে দীর্ঘদিন ধরে আত্মহত্যা বললেও ২৯ বছর পর হত্যা মামলা করার নির্দেশ দেন আদালত। সেই মামলায় ১১ জন আসামি রয়েছে এবং তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
দীর্ঘ এই সময় ধরে ছেলে হত্যার বিচার চাওয়া সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী যেন এবার একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন, ন্যায়বিচার পেতে যাচ্ছেন তিনি। নীলা চৌধুরী বলেন, খুনের চিহ্ন আর আত্মহত্যার চিহ্ন আলাদা। সেটা তার শরীরেও ছিল। এটি খুন, বোঝাই যাচ্ছিল। প্রমাণও ছিল। সামিরার ঘনিষ্ঠরা পরে তো বলেই দিল— কীভাবে খুন করেছে।
সালমান শাহের মা বলেন, এটা পরিকল্পিত খুন। ২৯ বছর ধরেই আমি বলে আসছি— আমার ছেলে আত্মহত্যা করার মতো ছেলে নয়। তিনি বলেন, আমরা খবর পাই আমার ছেলে অসুস্থ। কিন্তু আমরা যাওয়ার পর বাসায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি, কেন?
এরপর কয়েকটি প্রশ্ন রেখে নীলা চৌধুরী বলেন, সামিরার মা ৫ সেপ্টেম্বর কেন ঢাকা এসেছিল? ইমনের (সালমান শাহ) বিল্ডিংয়ে মৃত্যুর একদিন আগে একটি গাড়ি আসে, বোরকা পরে সেই গাড়িতে কারা ছিল? আমরা পরে শুনেছি। এগুলো তদন্ত করলে সব বের হয়ে আসবে বলে জানান তিনি।
নীলা চৌধুরী বলেন, আমার ছেলের সাদা কাপড়ে রক্তের দাগ ছিল। কিন্তু গলায় কোনো দাগ ছিল না। পোস্টমর্টেমের বাহানা করে আমার ছেলের পার্টস কেটে নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, সালমান শাহ হত্যা মামলায় ১১ জনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রধান আসামি করা হয়েছে নায়কের সাবেক স্ত্রী সামিরা হক। অন্য ১০ আসামি হলেন প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, খলনায়ক ডন, নায়কের সাবেক শাশুড়ি লতিফা হক লুসি, ডেভিড, জাভেদ, ফারুক, মেফিয়ার বিউটি সেন্টারের রুবি, আবদুস সাত্তার, সাজু ও রেজভি আহমেদ ফরহাদ।