রীতি বজায় রেখে অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারি মাসেই হতে হবে, প্রয়োজন হলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘চট বিছিয়ে’ বইমেলা করার প্রত্যয় রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন মওলানা ভাসানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশীদ।
শনিবার বইমেলা নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, “চিত্তরঞ্জন সাহা ‘চট বিছিয়ে’ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বইমেলার সূচনা করেছিলেন। এবার ফেব্রুয়ারি মাসে বইমেলা না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বইমেলা ফেব্রুয়ারিতেই হতে হবে। প্রয়োজন হলে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘চট বিছিয়ে’ বইমেলা করার জন্য আমাদের প্রত্যয় রাখতে হবে।”
একুশে বইমেলা ‘ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় ফেব্রুয়ারি মাসে আয়োজন করার দাবিতে’ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় এ সভা হয়। আয়োজক ছিল গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য।
সভায় প্রকাশক, লেখক, কবি, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠকদের অনেকে বক্তব্য দেন।
বাণিজ্য মেলা সঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত হলেও বইমেলা কেন ফেব্রুয়ারিতে হতে পারবে না, তা নিয়েও সভায় প্রশ্ন তোলেন কেউ কেউ।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির বইমেলা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি আবু বাশার ফিরোজ শেখ বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের কারণে বইমেলা স্থগিত করা কোনোভাবেই যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নয়। আমরা জেনেছি, ডিসেম্বর, জানুয়ারি মাসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রাজনৈতিক সমাবেশ হবে। নির্বাচনকেন্দ্রিক বিভিন্ন সভা-সমাবেশ হবে। এজন্য বইমেলা স্থগিত করা হয়েছে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে দেশে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। সেটা মাথায় রেখে এবার বইমেলা এগিয়ে ডিসেম্বরে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলা একাডেমি।
কিন্তু ২৮ সেপ্টেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে সেই সিদ্ধান্ত ‘স্থগিত’ করার কথা জানায় আয়োজক প্রতিষ্ঠানটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে তাদেরকে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
একাডেমি সেদিন বলেছিন, প্রকাশক ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করে নতুন তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু সেই তারিখ এখনও আসেনি।
এমন প্রেক্ষাপটে একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিতেই আয়োজন করার দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার মতবিনিময় সভা আয়োজন করে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, মেলা স্থগিত না করে ফেব্রুয়ারিতে শুধু নির্বাচনের দিন বইমেলা বন্ধ রাখা যেতে পারে।
গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের আহ্বায়ক মফিজুর রহমান লালটুর সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহ আলমের সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন উদীচী শিল্পগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রকাশক ও সংস্কৃতিকর্মী সৈয়দ জাকির, চাকসুর সাবেক ভিপি এবং প্রগতি লেখক সংঘের সহসভাপতি শামসুজ্জামান হীরা, কবি ও গীতিকার হাসান ফকরি, গণসংস্কৃতি কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জাকির হোসেন, প্রকাশক দেলোয়ার হাসান, জাতীয় কবিতা পরিষদের সবুজ মনির।