বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১০ অপরাহ্ন

জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে হত্যায় অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৩ প্রদর্শন করেছেন

জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত তেতসুয়া ইয়ামাগামি আদালতে দোষ স্বীকার করেছেন। টোকিওতে সোমবার (২৮ অক্টোবর) বিচার শুরুর প্রথম দিনেই আদালতকে তিনি বলেন, ‘সবকিছু সত্যি।’

২০২২ সালে পশ্চিম জাপানের নারা শহরে একটি নির্বাচনী প্রচারসভায় ঘরে তৈরি বন্দুক দিয়ে শিনজো আবেকে গুলি করেন ৪৫ বছর বয়সী ইয়ামাগামি। গুলিবিদ্ধ হয়ে ওই দিনই হাসপাতালে মারা যান জাপানের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। তাঁর মৃত্যুতে বিশ্বজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল।

‘আবেনোমিকস’ নামে পরিচিত অর্থনৈতিক নীতির প্রণেতা এবং কট্টর পররাষ্ট্রনীতির জন্য খ্যাত শিনজো আবেকে হত্যার পর রাজনৈতিকভাবে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ঘটনাটির পর প্রকাশ্যে আসে শাসক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ও ইউনিফিকেশন চার্চের (যা ‘মুনিজ’ নামেও পরিচিত) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।

ইয়ামাগামি তদন্তকারীদের জানান, তিনি আবেকে গুলি করেছিলেন কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন, আবে ওই ধর্মীয় গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়েছেন, যার কারণে তাঁর মা ও পরিবার আর্থিকভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। ইয়ামাগামির অভিযোগ, ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রমাণ হিসেবে তাঁর মা ওই চার্চে প্রায় ১০ কোটি ইয়েন (প্রায় ৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার) দান করেছিলেন।

এই অভিযোগের পর চার্চের কর্মকাণ্ড নিয়ে তদন্ত শুরু হয়। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রতিষ্ঠিত এবং গণবিবাহের জন্য পরিচিত এই সংগঠনটির বিরুদ্ধে তদন্তের একপর্যায়ে জাপানের চার মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে চলতি বছরের মার্চে টোকিও আদালত ইউনিফিকেশন চার্চকে বিলুপ্তির আদেশ দেন, তাদের করমুক্তির সুবিধা বাতিল করেন এবং সম্পত্তি বিক্রির নির্দেশ দেন।

জাপান টাইমসের বরাতে সোমবার (২৮ অক্টোবর) বিবিসি জানিয়েছে, এত কিছুর পরও ইয়ামাগামির মা তাঁর বিশ্বাস থেকে সরে আসেননি। তিনি স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড আমার বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করেছে।’

ইয়ামাগামির বিচার আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তিনি অস্ত্র আইন ভঙ্গের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর আইনজীবীর দাবি, অভিযুক্তের তৈরি বন্দুকটি জাপানের প্রচলিত অস্ত্র সংজ্ঞার আওতায় পড়ে না।

জাপানে অস্ত্র সহিংসতার ঘটনা খুবই কম। শিনজো আবে হত্যার পর থেকে দেশটিতে ঘরে তৈরি বন্দুকের ওপর আরও কঠোর আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ