সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৫২ অপরাহ্ন

পালটাপালটিতে সংস্কার-নির্বাচন পেছাতে পারে: নাহিদ ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১৭ প্রদর্শন করেছেন

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বিএনপি ও জামায়াতের পালটাপালটিতে সংস্কার এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন দুটোই পিছিয়ে যেতে পারে। এছাড়া জুলাই জাতীয় সনদ, নির্বাচনি জোট ও দলীয় প্রার্থী মনোনয়নসহ সমসাময়িক রাজনৈতিক ইস্যু নিয়েও তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

রোববার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। তিনি কোনো ধরনের ভূমিকা বা লিখিত বক্তব্য পাঠ না করেই সরাসরি সাংবাদিককের কাছ থেকে প্রশ্ন আহ্বান করেন। ঘণ্টাব্যাপী চলে প্রশ্নোত্তর পর্ব।

শুরুতেই এক সংবাদিক জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে বিদ্যমান রাজনৈতিক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করেন। জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, বিএনপি ঐকমত্য কমিশনের শুরু থেকেই মৌলিক বিষয়গুলোয় নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে বিরোধিতা করার চেষ্টা করেছে। ফলে সংস্কারের পক্ষে তারা কতটুকু আছে, এ বিষয়ে জনগণের ভেতর প্রশ্ন আছে। অন্যদিকে জামায়াতের কার্যক্রমে মনে হচ্ছে, নির্বাচন পেছানোর কোনো দুরভিসন্ধি তাদের আছে।

গণভোটের সময় নিয়ে দ্বন্দ্ব অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, গণভোট আগে হবে, না নির্বাচনের দিন হবে এটায় বিএনপি-জামায়াত আবার একটা দ্বন্দ্বে চলে গেছে। উচ্চকক্ষে পিআর, দুইকক্ষে পিআরের দাবি এনে এ ইস্যুকে ঘুরিয়ে দেওয়ার একটি চেষ্টা চালানো হয়েছে।

জুলাই সনদ স্বাক্ষর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকে জুলাই সনদ নিয়ে প্রতারণার কথা হচ্ছে। অথচ আমরা যখন স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে গেলাম না, যারা প্রধানত এই সনদের দাবিটা করেছিল তারা সনদে স্বাক্ষর করল না, তখন তাদের কাছে মনে হলো না জাতির সঙ্গে প্রতারণা বা অনৈক্য হয়েছে। ফলে জাতীয় অনৈক্য জুলাই সনদ যেদিন স্বাক্ষরিত হয়েছে সেদিন হয়েছিল। যারা বাছবিচার ছাড়াই জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছে তারাই জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে।

এনসিপির এই নেতা বলেন, গণভোট আমরা নির্বাচনের দিনও করতে পারি, আগেও করতে পারি। তবে জুলাই সনদ অধ্যাপক ইউনূসকেই জারি করতে হবে। রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষরিত জুলাই সনদ কেউ মানবে না। তার সেই এখতিয়ারও নেই।

এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, রাজনৈতিক অনৈক্য তত তৈরি হবে। তবে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এই যে গণহত্যা, এটা আসলে দল হিসাবে আওয়ামী লীগ অপরাধ করেছে। কেবল ব্যক্তি হিসাবে শেখ হাসিনার একার নয়।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চায়, তাহলে অবশ্যই ভারতকে আওয়ামী লীগের চোখে বাংলাদেশকে দেখার নীতি থেকে সরে আসতে হবে। তাদের বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। যতদিন ভারত হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে রাখবে, ততদিন ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হতে পারে না। ভারত হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে জুলাই গণহত্যাকে সমর্থন দিচ্ছে। তাদের এই অবস্থান পরিবর্তন না করলে, বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক শীতলই থাকবে।

আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন এবং কোন আসন থেকে নির্বাচন করবেন জানতে চাইলে নাহিদ বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ৩০০ আসন ধরেই এগোচ্ছি। আমরা হয়তো এ মাসেই আমাদের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করব। এছাড়া আমি যেহেতু ঢাকার সন্তান, আমাকে ঢাকা থেকেই হয়তো….।

এনসিপি কোনো জোটে যাচ্ছে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে নাহিদ বলেন, যদি সংস্কারের পক্ষে কেউ না থাকে, তাহলে তাদের সঙ্গে আমাদের জোটে যাওয়া সম্ভব নয়। আমাদের মৌলিক দাবিগুলোর সঙ্গে যারা কাছাকাছি আছে, এরকম দলের সঙ্গে আমাদের যদি ঐক্যবদ্ধ হতে হয় বা কোনো ধরনের সমঝোতায় যেতে হয়, তাহলে সেটা আমরা বিবেচনায় রাখব।

সরকারে থাকা দুই ছাত্র উপদেষ্টা কতদিন নাগাদ পদত্যাগ করতে পারেন এবং তারা এনসিপিতে যোগ দিয়ে নির্বাচন করবেন কিনা এমন প্রশ্নে নাহিদ বলেন, এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ