মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৫৭ অপরাহ্ন

বিএনপির ফাঁকা রাখা ৬৩ আসনে অগ্রাধিকার পাবেন যারা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১৯ প্রদর্শন করেছেন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির পক্ষ থেকে ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি ৬৩টি আসন ফাঁকা রেখেছে বিএনপি। তবে এ তালিকার বেশির ভাগ আসনে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন পরীক্ষিত জোটভুক্ত দলের শরিক নেতারা। যেসব রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির পাশে ছিল, এমনকি ৫ আগস্টের পরও অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে সেই দলগুলোর কয়েকজন শীর্ষ নেতার জন্য বেশ কিছু আসন ফাঁকা রেখেছে দলটি।

জোটগতভাবে আসন ভাগাভাগির সময়ে ওইসব আসনে বিএনপি শেষ পর্যন্ত কাকে বেছে নেবে তা এখন দেখার বিষয়। এছাড়া জোটগতভাবে বণ্টনের পর বাকি আসনে দলের অবশিষ্ট ত্যাগী নেতাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। এর মধ্যে এমন কিছু আসন এখনো ফাঁকা রাখা হয়েছে যেখানে একাধিক যোগ্য প্রার্থীর মধ্যে কাকে মনোনয়ন দিলে জিতে আসা সহজ হবে সেটি আরও যাচাই করে দেখা হচ্ছে। আবার অনেক আসনে এখন একক প্রার্থী ঘোষণা করা হলে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ঘটতে পারে-এমন আশঙ্কা থেকে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। দলের নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র যুগান্তরকে এমনটি জানিয়েছে।

সোমবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই সময়ে তার বক্তব্যে জোটপ্রার্থীদের জন্য আসন ফাঁকা রাখার কথা উঠে আসে। তিনি বলেন, প্রায় ২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলন করেছেন তাদের মধ্যে যেসব আসনে তাদের প্রার্থী দিতে চান সেখানে আমরা প্রার্থী দেইনি। তারা কোন কোন আসনে প্রার্থী দেবেন তা আমাদের জানাবেন। পরে সমন্বয় করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলডিপি, গণতন্ত্র মঞ্চ, গণঅধিকার পরিষদ, গণফোরাম, ১২ দলীয় জোট, সমমনা জোট ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের জন্য আসন ফাঁকা রেখেছে বিএনপি। বিএনপির সমর্থন পাওয়ার ক্ষেত্রে যারা অগ্রাধিকার পেতে পারেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদের ছেলে অধ্যাপক ওমর ফারুক। তিনি চট্টগ্রাম-১৪ আসনে বিএনপির সমর্থন পেতে পারেন। ওই আসনে কাউকে মনোনয়ন দেয়নি বিএনপি। বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। এ আসনে কাউকে মনোনয়ন দেয়নি বিএনপি। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর তিনি পটুয়াখালী-৩ আসনে সমর্থন পেতে পারেন। দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান নির্বাচন করবেন ঝিনাইদহ-২ থেকে। এ আসনেও বিএনপি প্রার্থী দেয়নি।

লক্ষ্মীপুর-১ আসনে সমর্থন পেতে পারেন বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র সাহাদাত হোসেন সেলিম। এ আসনেও বিএনপি কাউকে মনোনয়ন দেয়নি। এ বিষয়ে সাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, আমাকে অনেক আগেই মৌখিকভাবে কাজ করার জন্য বিএনপির উচ্চমহল থেকে সংকেত দেওয়া হয়েছে। আমি নির্বাচনি কার্যক্রম চালাচ্ছি। আশা করছি, লক্ষ্মীপুর-১ আসনে বিএনপির সমর্থন আমার ওপর থাকবে। তিনি আরও জানান, ২০১৮ সালেও তিনি এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে লড়বেন জেএসডির আসম আব্দুর রবের স্ত্রী তানিয়া রব। এ আসনেও প্রার্থী দেয়নি বিএনপি। ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচন করবেন বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ। আর ববি হাজ্জাজ নির্বাচন করবেন ঢাকা-১৩ থেকে। এ দুটি আসনে বিএনপি কোনো প্রার্থী দেয়নি।

ঝালকাঠি-১ আসনে বিএনপির সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। এ আসনে বিএনপি কাউকে মনোনয়ন দেয়নি। এ বিষয়ে মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের সময়ে আমরা বিএনপির পাশে থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করেছি। এখনো বিএনপির পাশেই আছি। জোটসঙ্গী হিসাবে আমি ঝালকাঠি-১ আসনে বিএনপির সমর্থন পাব বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ২০১৮ সালের নির্বাচনে পিরোজপুর-২ আসনে নির্বাচন করেছিলাম। এবার ঝালকাঠি-১ আসনে বিএনপি আমাকে সমর্থন দেবে বলে বিশ্বাস করি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি ওই নির্বাচনি এলাকায় জনসংযোগও করছেন। এ আসনটিতেও কাউকে মনোনয়ন দেয়নি দলটি।

এছাড়া জোটের আরও অনেক নেতার আসন ফাঁকা রয়েছে। সেখানে ওইসব নেতাকে সমর্থন দেওয়া হতে পারে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ