হামজা চৌধুরীর ম্যাজিক বিফলে গেল আরও একবার। নেপালের সঙ্গে এগিয়ে গিয়েও শেষ মুহূর্তের গোলে ড্র করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তবে শেষ মুহূর্তের এই গোল অবশ্য নতুন কিছু নয়। এই তো গেল মাসে একবার হংকংয়ের বিপক্ষে এমন পরিস্থিতিতে পড়েছিল দল। একেবারে শেষ সেকেন্ডের গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ।
এমনটা এবারই প্রথম নয়। শেষ দশ বছর দেখলে আপনি অন্তত ১০ ম্যাচ পাবেন যেখানে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে পয়েন্ট খুইয়েছে, নাহয় হেরেই বসেছে বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে সল্ট লেকে ভারতের বিপক্ষে এগিয়ে গিয়েও ড্র করে বাংলাদশ। এরপর ২০২১ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ডু অর ডাই ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে বিদায় নিতে হয়। সে বছরই সেপ্টেম্বরে চার জাতি সিরিজের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে বসে বিদায় নেয় বাংলাদেশ, সেটাও শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি উপহার করে বসে।
এরপর কোচ হাভিয়ের কাবরেরার আমলেও এই রোগ থেকে নিস্তার পায়নি দল। ২০২৩ সাফের সেমিফাইনালে কুয়েতের বিপক্ষে নির্ধারিত সময় শেষে অতিরিক্ত সময়েও যখন গোলশূন্য থেকে পেনাল্টি শ্যুটআউটের প্রস্তুতি নিচ্ছিল দুই দল, তখনই গোল হজম করে বসে বাংলাদেশ। গেল বছর স্বাধীনতা দিবসে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ফিলিস্তিনকে আরেকটু হলে রুখেই দেওয়া যাচ্ছিল, ইনজুরি সময়ে গোল হজম করে সে স্বপ্ন আর সত্যি হয়নি।
তার পর এল চলতি বছরে হংকংয়ের কাছে ৪-৩ ব্যবধানের হার, আর নেপালের সঙ্গে এই হারের সমান ড্র। তাতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বাংলাদেশ কেন বারবার শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে বসে?
মানসিক সমস্যা নাকি মনোযোগের অভাব? কোচ হাভিয়ের কাবরেরা এসবের ব্যাখ্যা জানেন না। তার অধীনেই এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পড়েছে অন্তত ৪ বার। কোচ হিসেবে এই ‘নিয়মিত ঘটনা’ বনে যাওয়া বিষয়টার কারণ খুঁজে বের করতে পারেননি কাবরেরা, তার কথা থেকেই পরিষ্কার বিষয়টা। তিনি বলেন, ‘আমি বলব না এটা মানসিক সমস্যা। অনুশীলনে এবং ম্যাচে আমরা শত শত বার এই ধরনের আক্রমণ ঠেকানোর অনুশীলন করি। কিন্তু যেকোনো ম্যাচে এমন ঘটনা ঘটতেই পারে। হ্যাঁ, এটা সত্যি যে সাম্প্রতিক সময়ে এটা বারবার ঘটছে, কিন্তু আমি মনে করি না এটা মানসিক সমস্যা।’
‘খেলোয়াড়রা ২৫ মিনিট নয়, ৯৫ বা ১০০ মিনিট পর্যন্ত ডিফেন্ড করতে চায়। আমরা গোল ঠেকানোর জন্য আমাদের সেরাটা দিচ্ছি, আবার প্রতিপক্ষও গোল করার জন্য তাদের সেরাটা দিচ্ছে। এটা দুই দলের জন্যই সমানে সমান পরিস্থিতি।’
কোচ কাবরেরা অবশ্য এরপর জানালেন তার দল ভুলগুলো বিশ্লেষণ করবে ভিডিও দেখে। তিনি আশা প্রকাশ করেন আগামী মঙ্গলবার ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে এমনটা আর হবে না।