সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪১ অপরাহ্ন

জীবিত বাবাকে মৃত দেখিয়ে জমি দখল

অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০২৪
  • ৪১ প্রদর্শন করেছেন

  টাঙ্গাইলের সখীপুরে উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের ইন্দারজানী ইন্নছ নগর গ্রামে বৃদ্ধ বাবাকে মৃত দেখিয়ে তার সব জমি লিখে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ছেলের বিরুদ্ধে। এর বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী চার বোন। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ ও অনুসন্ধানে জানা যায়, টাঙ্গাইলের সখীপুরের বাসিন্দা দানেছ আলীর বয়স ৯২ বছর। তার একমাত্র ছেলের নাম সাইফুল ইসলাম। এছাড়াও তার সাত মেয়ে আছে। তবে বেঁচে থাকলেও কাগজে-কলমে এখন তিনি মৃত। মৃত দেখিয়ে ৫ বছর আগে ভোটার তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়। এমনকি তার নামে নেই কোনো সম্পত্তিও। অভিযোগ উঠেছে, দানেছ আলীর একমাত্র ছেলে সাইফুল ইসলাম তার বোনদেরকে বঞ্চিত করে সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিতে বাবাকে মৃত দেখিয়ে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেন। নির্বাচনের কমিশনের নথির তথ্য বলছে, দানেছ আলীকে ২০১০ সালে মৃত দেখিয়ে ২০১৯ সালে ভোটার তালিকা থেকে নাম কাটার আবেদন করেন তার ছেলে সাইফুল ইসলাম। নথিতে সাইফুলের নাম থাকলেও অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেছেন, ভুল সংশোধন করা হবে। নির্বাচন কার্যালয়ের নথি বলছে, ২০১০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি দানেছ আলীর মৃত্যু হয়েছে। কাগজে-কলমে মৃত হওয়ায় দানেছ আলীর সমস্ত জমি বিএস (বাংলাদেশ সার্ভে) রেকর্ডে একমাত্র ছেলে সাইফুলের নামে। এদিকে ২০১১ সালে ৪৯ শতাংশ জমি বিক্রি করেন দানেছ আলী। গত ১৭ মার্চ ওই জমির নামজারি (খারিজ) করতে গেলে ভূমি কার্যালয় থেকে জানানো হয়, দানেছ আলী মারা গেছেন ২০১০ সালে, সব সম্পত্তি সাইফুলের নামে। উল্টো মৃত ব্যক্তির কাছ থেকে কীভাবে জমি কিনলেন- এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হন ক্রেতারা। । এ নিয়ে তোলপাড় হলে বিষয়টি জানাজানি হয় এবং পরদিন তার মেয়েরা লিখিত অভিযোগ দেন। সাইফুল ইসলামের বোন চায়না আক্তার বলেন, বাবা জীবিত থাকতে আমাদের ঠকাতে ভাই এমন জঘন্য কাজ করেছেন। ও একটা প্রতারক, বেঈমান, সম্পত্তি লোভী।অভিযোগের বিষয়ে সাইফুল ইসলাম বলেন, ভোটার তালিকা থেকে বাবার নাম বাদ পড়ার বিষয়টি আমি জানি না। কেউ হয়ত শত্রুতার জেরে আমার নাম ব্যবহার করে আবেদন করেছেন। আমার বাবা এখনো জীবিত রয়েছেন। নতুন রেকর্ডে বাবার জমি কীভাবে আপনার নামে গেল- এমন প্রশ্নের জবাবে সাইফুল বলেন, ভুলবশত আমার নাম উঠে থাকলে তা সংশোধন করা হবে। ভোটার হালনাগাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইন্দারজানী গ্রামের হাজী আজহার আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিউটি আক্তার বলেন, ২০১৯ সালে তথ্য সংগ্রহের সময় দানেছ আলীর ছেলে সাইফুল তার বাবার মৃত্যু সনদ দেখিয়েছেন। সাইফুল নিজেই বলেছেন, তার বাবা ২০১০ সালে মারা গেছেন। ছেলের দেওয়া তথ্য ও মৃত্যুসনদ অনুযায়ী আমি নির্বাচন অফিসে তথ্য জমা দিয়ে দায়িত্ব পালন করেছি। নিজের ছেলে যদি মিথ্যা তথ্য ও ভুয়া কাগজ দেখায় তাহলে আমার কি করার আছে? বিষয়টি তদন্ত করা হবে উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, আমাদের তালিকায় দানেছ আলী মৃত। এরপরও বিষয়টি নিয়ে যেহেতু কথা উঠেছে, তাই আবেদন প্রক্রিয়াটি যথাযথ নিয়ম মেনে হয়েছিল কিনা বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ হোসেন পাটোয়ারী বলেন, অভিযোগ হাতে পেয়েছি। বিষয়ট তদন্ত করতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মন্জুরুল মোর্শেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ