কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে অপহৃত শিশু ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে কুমিল্লা লালমাই থানা এলাকা থেকে ২১ দিন পরে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অপহরণ চক্রের মাস্টার মাইন্ড আনোয়ার সাদেকসহ বিভিন্ন সময়ে ১৭ জনকে গ্রেফতারসহ মুক্তিপণের ৪ লাখ টাকা ও ৪টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- টেকনাফের মৌচনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আনোয়ার সাদেক, নাগু, আয়েশা বেগম, হোসনে আরা, রনিসহ ১২ জন।শনিবার রাতে কুমিল্লা লালমাই থানা এলাকা থেকে অপহৃত ভিকটিম সোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে উদ্ধার পরে অপহরণকারীদের গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি।অপহরণের এ ঘটনার বিষয় রবিবার দুপুর ১২টার দিকে টেকনাফ মডেল থানার হল রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেল আহমেদ জানান, গত শনিবার( ৯ মার্চ)দুপুর ১২ টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব পানখালী এলাকা হতে আবু হুরায়রা মাদ্রাসার ১ম শ্রেণির ছাত্র ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তিরা অপহরণ করে। তিনি জানান, শিশু অপহরণের সংবাদ পাওয়া মাত্রই কক্সবাজার জেলার পুলিশ সুপারের নির্দেশে টেকনাফ মডেল থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশের টিম অপহৃত শিশুটি উদ্ধারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে অভিযান পরিচালনা করে আসছেন। মো. রাসেল আহমেদ জানান, পরবর্তীতে ২১ দিন পরে শনিবার রাতে কুমিল্লার লালমাই থানা এলাকা থেকে অপহৃত শিশুকে উদ্ধারের পর, অপহরণকারী চক্রের মাস্টার মাইন্ড মৌচনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আনোয়ার সাদেক, নাগু ডাকাত, আয়েশা বেগম, হোসনে আরা ও রনিকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে এ ঘটনায় সঙ্গে জড়িত আরো ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ভিকটিম উদ্ধারের অভিযান পরিচালনাকালে জানা যায় শিশু অপহরণের মাস্টারমাইন্ড আনোয়ার সাদেক এর পরিকল্পনায় বাদীনির ভাড়াটিয়া পুরাতন রোহিঙ্গা নাছের এবং মাজুমার নেতৃত্বে উম্মে সালমা, শাহীন এবং সিএনজি ড্রাইভার নাসির আলম মাদ্রাসা হতে বাসায় যাওয়ার পথে শিশুটিকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। অতপর কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে সিএনজি ড্রাইভার নাছির এবং উম্মে সালমাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় আনোয়ার সাদেক, শাহীন, তোহা, নাগু ডাকাত, মধু, হোসনে আরা এবং তাদের পরিবারের সদ্যস্যরা অপহরণ চক্রের সক্রিয় সদস্য। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ আদায়ের কৌশল হিসাবে মহেশখালী থানাধীন কালারমারছড়া দুর্গম পাহাড়ী এলাকা থেকে ভিকটিমের মাকে বারং বার মোবাইলের মাধ্যমে ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। এমনকি মুক্তিপণ না দিলে শিশুটি হত্যা করার হুমকি প্রদান করে। মুক্তিপন আদায়ের লক্ষ্যে অপহৃত শিশুকে বিভিন্ন সময় নির্মমভাবে মারধর করে ভিকটিমের মাসহ পরিবারের লোকজনদেরকে কান্নাকাটির শব্দ শোনায়। ইতিমধ্যে অপহরণ চক্রের মাস্টার মাইন্ড আনোয়ার সাদেকসহ এ পর্যন্ত মোট ১৭ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপহৃত শিশু ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহর মুক্তিপণের ৪ লাখ টাকা সহ অপহরণে ব্যবহৃত সিএনজি ও ৪টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পরে গ্রেফতারকৃত আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়।