সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৭ অপরাহ্ন

বিশ্ববাজারে তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা থাকলেও চাহিদা কম

প্রতিবেদকের নামঃ
  • প্রকাশের সময়ঃ মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২০ প্রদর্শন করেছেন

বিশ্ববাজারে আজ মঙ্গলবার সকালে তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে। হিজবুল্লাহ বাহিনীর প্রধান ইসরায়েলের হামলায় নিহত হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যে যে রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল, তেলের বাজারে তার প্রভাব খুব একটা পড়েনি। মূলত, চাহিদা কমে যাওয়া ও বাজারে জোগান বৃদ্ধি পাওয়ায় তেলের দাম খুব একটা বাড়েনি।

রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, আজ সকালে ডিসেম্বর মাসের জন্য বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৩ সেন্ট বেড়ে ৭১ দশমিক ৮৩ ডলারে উঠেছে। এ ছাড়া নভেম্বর মাসের চুক্তির জন্য ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ১১ সেন্ট বেড়ে ৬৮ দশমিক ২৮ ডলারে উঠেছে।

বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদা কমে গেছে; সে কারণে এ বছর তেলের বাজার নিম্নমুখী। মূলত, চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশটির তেল আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে।
চীন বিশ্বের বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ। ফলে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি কমে গেলে তেলের বাজারে তার প্রভাব পড়ে। এর মধ্যেই গতকাল সোমবার জানা গেছে, চীনের উৎপাদন কার্যক্রম এ নিয়ে টানা পাঁচ মাসের মতো কমেছে।

এদিকে সেপ্টেম্বর মাসে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারের দাম ৯ শতাংশ কমেছে; এ নিয়ে টানা তিন মাস ব্রেন্ট ক্রুডের দাম কমল। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের পর আর কোনো মাসে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম এতটা কমেনি। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১৭ শতাংশ কমেছে—এক বছরের মধ্যে কোনো প্রান্তিকে এটাই ব্রেন্ট ক্রুডের সর্বোচ্চ মূল্যহ্রাস। একইভাবে ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম গত মাসে ৭ শতাংশ এবং তৃতীয় প্রান্তিকে ১৬ শতাংশ কমেছে।
চাহিদার সংকটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক উত্তেজনা। বিষয়টি হলো, ইসরায়েলের সঙ্গে লেবাননের হিজবুল্লাহ বাহিনীর সংঘাত শুরু হওয়ায় ইরানের এই লড়াইয়ে সরাসরি জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। ইরান এই হিজবুল্লাহ বাহিনীকে পৃষ্ঠপোষকতা করে। দেশটি ওপেকের সদস্য। এখন তারা সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে তেলের সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে।

এদিকে আজ ইসরায়েলের সেনাবাহিনী দক্ষিণ লেবাননের সীমান্তবর্তী এলাকায় হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সীমিত পরিসরে সুনির্দিষ্ট হামলা শুরু করেছে।

এ পরিস্থিতিতেও বৃহৎ তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো এই বছরের মধ্যে তেলের উৎপাদন আরও বাড়াতে চায়। এএনজেড অ্যানালিস্টের বিশ্লেষকেরা এক নোটে বলেন, বিশ্লেষকেরা এখন বাজার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি। তবে তেলের দাম খুব একটা বাড়ছে না।

এএনজেড আরও বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যের অনিশ্চয়তা আছে ঠিক, কিন্তু ওপেকের তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির সম্ভাবনার কারণে বাজারে তেলের দাম তেমন একটা বাড়ছে না। তেলের বাজার স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে; সে কারণে তেলের দাম সব সময় একধরনের চাপের মুখে আছে।
গত দুই বছর তেলের উৎপাদন ছাঁটাইয়ের পর চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ওপেক তেল উৎপাদন বাড়াতে চায়। তাদের লক্ষ্য তেলের উৎপাদন দৈনিক ১ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল বৃদ্ধি করা।

গতকাল রয়টার্সের এক জরিপে দেখা যায়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেলের মজুত ২ দশমিক ১ মিলিয়ন বা ২১ লাখ ব্যারেল কমেছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ