মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৬ অপরাহ্ন

রাশিয়ায় মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করলে পাল্টা জবাব দেবে মস্কো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৩৩ প্রদর্শন করেছেন

ইউক্রেন যদি যুক্তরাষ্ট্রের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডে আঘাত হানে, তবে তার জবাবে তারা যথাযথ ও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাশিয়ায় এই ধরনের হামলা যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়ানোর শামিল হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি রাশিয়ার অভ্যন্তরে লক্ষ্যবস্তুতে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছেন। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই মাস আগে নেওয়া এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে বড় পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

তবে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বিষয়ে পরামর্শ পেয়েছেন কিনা বা তিনি এই সিদ্ধান্ত বহাল রাখবেন কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। নির্বাচনের আগে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন।

ইউক্রেন ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের এটিএসিএমএস (আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম) ক্ষেপণাস্ত্র পেয়েছে, যার পাল্লা প্রায় ৩০০ কিলোমিটার। একই সঙ্গে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্রও তাদের হাতে রয়েছে। সেগুলোর পাল্লাও ওই একই এরকম। তবে পশ্চিমা দেশগুলো এতদিন ইউক্রেনকে সেগুলো রাশিয়ার অভ্যন্তরে ব্যবহার করতে নিষেধ করেছিল।

মঙ্গলবার ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের এক হাজারতম দিন পূর্ণ হবে। এমন দিনে বাইডেন ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় মনে করা হচ্ছে, যুদ্ধ এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলকে পৌঁছেছে। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরু করেছিল রাশিয়া।

এদিকে রাশিয়া ইউক্রেনের অবকাঠামোতে আক্রমণ জোরদার করেছে। সেইসঙ্গে, রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে উত্তর কোরিয়া থেকে ১০ হাজারের বেশি সেনা পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়া আরও এক লাখ সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম রাশিয়াকে সরবরাহ করতে পারে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, এই নতুন অস্ত্র চুক্তি নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা নাও আসতে পারে। তিনি বলেন, ক্ষেপণাস্ত্রই নিজের ভাষায় কথা বলবে।

ইউক্রেন প্রথমে কুরস্ক অঞ্চলে এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিছু সূত্র বলছে, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো কুরস্কে এর ব্যবহার সীমিত রাখার শর্ত দিয়েছে। এটি রাশিয়াকে সহায়তা করার ব্যাপারে উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়ার জন্য সতর্কবার্তা হতে পারে।

জো বাইডেনের এই সিদ্ধান্ত (যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং সমগ্র পশ্চিমারা এই পথেই হাঁটবে হয়তো) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বুঝিয়ে দিল যে, সামরিক উপায়ে তিনি এই যুদ্ধ জিততে পারবেন না।

পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি। তবে গত সেপ্টেম্বরে তিনি বলেছিলেন, ইউক্রেন যদি এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে, তবে তা ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণের সমতুল্য হবে।

সোমবার পুতিনের মুখপাত্র বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখানে আগুনে ঘি ঢালছে। তবে মার্কিন ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন ফাইনার বলেছেন, রাশিয়াকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে আমরা এর প্রতিক্রিয়া জানাবো; বিশেষ করে উত্তর কোরিয়ার সেনাদের উপস্থিতি এবং ইউক্রেনের অবকাঠামোয় রাশিয়ার বড় ধরনের হামলার জবাবে।

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।

গত ৫ নভেম্বর তিনি নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন এবং আগামী ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে ফিরবেন। ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বিদেশি যুদ্ধে জড়ানো বন্ধ করবেন এবং করদাতাদের অর্থ আমেরিকানদের জীবনমান উন্নয়নে ব্যয় করবেন।

তিনি বলেছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করবেন। তবে তিনি কিভাবে তা করবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। জেলেনস্কি সম্প্রতি বলেছেন, তিনি আশা করেন ট্রাম্প ইউক্রেন ও রাশিয়াকে একটি শান্তিচুক্তিতে আসার জন্য চাপ প্রয়োগ করবেন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ