বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৫ অপরাহ্ন

মোহাম্মদপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মীদের ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৯ প্রদর্শন করেছেন

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মাঠের ভেতর জন্মদিনের কেক কাটাকে কেন্দ্র করে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ কর্মীদের ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন।

শ্যামলী পার্ক মাঠে গতকাল (রোববার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারী সবাই মোহাম্মদপুর থানা ২৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং ঘটনার সময় তারা সবাই মাদকসেবী ছিল বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় নিহতের নাম আকবর হোসেন (২৮)। তার বাবার নাম আনোয়ার হোসেন। নিহত আকবর রাজধানীর আদাবর এলাকায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন।

জানা যায়, গতকাল (রোববার) দুপুর ২টায় শ্যামলী পার্ক মাঠের ভেতর বন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে কেক কাটতে যান সজল নামে এক যুবক। সে সময় মাঠের ভেতরে ডেভিড রাসেল, রিয়াজ, খলিল, জলিল, রিপন ও রবিসহ কয়েকজন মাদকসেবন করছিল। কেক কাটার সময় ডেভিড রাসেল ও রিয়াজসহ মাদকসেবীদের একটি দল সজলের ওপর অতর্কিত হামলা করে তাকে মারধর করে। মারধরের সময় তারা বলে, ‘কার অনুমতি নিয়ে মাঠে কেক কাটতে আসলি? আমরা এখানে বসে আছি দেখস না’। মারধরের এক পর্যায়ে সজল ও তার বন্ধুরা মিলে মাঠ থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান। সন্ধ্যায় সজল ও বন্ধুরা মিলে মাঠের পাশ দিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় আবারও মাদকসেবীরা মিলে তাদের আটক করে। একপর্যায়ে তারা দেশীয় ধারাল অস্ত্র নিয়ে এসে আকস্মিক হামলা করে। এ সময় আকবর নামে আরেক যুবক মারামারি থামাতে আসলে মাদকসেবীরা তার পেটে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে ঘটনাস্থলে তিনি লুটিয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে আকবরের মৃত্যু হয়।

আরও জানা যায়, হামলাকারী সবাই মোহাম্মদপুর থানা ২৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল। সরকার পতনের পর তারা শ্যামলী পার্ক মাঠের ভেতর মাদক বিক্রি ও সেবন করে আসছে। মাদক ও কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকায় এদের কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না।

এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রাসেল মিয়া জানান, গতকাল (রোববার) সন্ধ্যার পর শ্যামলী মাঠে পোড়া বস্তির রিয়াজ, দাগী, রাজা ও ডেভিড রাসেলসহ কয়েকজন মাদকসেবী ধারাল অস্ত্র নিয়ে এসে গালাগালি শুরু করে। এ সময় তারা সবাই মাদকসেবী ছিল। এদের মধ্যে রিয়াজ ও ডেভিড রাসেল ছুরি নিয়ে এসে আকবরের পেটে আঘাত করে।এরপর আমরা সবাই তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। তারা সবাই ছাত্রলীগ করতো। বর্তমানে তারা শ্যামলী পার্ক মাঠের ভেতর মাদক বিক্রি ও সেবন করে।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী মো. শরীফ জানান, গতকাল (রোববার) সন্ধ্যায় দেশীয় ধারাল অস্ত্র নিয়ে এসে ছাত্রলীগের কয়েকজন আকস্মিকভাবে সজলের ওপর হামলা করে। এ সময় আকবর দৌড়ে তাদের ছাড়াতে গেলে তার পেটে ছুরি মারে।ওই সময় সে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানোর পর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। হামলাকারীরা এই মাঠে মাদক বিক্রি ও সেবন করে। তারা আগে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল। এখন প্রতিনিয়ত শ্যামলী পার্ক মাঠে বসে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি ও মাদকসেবন করে।

নিহতের বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, কে বা কারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে আমি কিছুই জানি না। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই।

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী ইফতেখার জানান, এ ঘটনায় থানা থেকে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।তারা ঘটনাস্থল দেখে এসেছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ