ভারতীয় ধনকুবের এবং বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে অভিযোগ গঠন এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে উত্তপ্ত তর্ক-বিতর্ক ও হট্টগোলের জেরে ভারতের পার্লামেন্ট লোকসভা অধিবেশন মুলতবি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভারতের সংসদে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে তৃতীয়বারের মতো এমন ঘটনা ঘটল।
গত ২০ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের একটি আদালতে গৌতম আদানি ও তার সাত সহযোগীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়। সে অভিযোগে বলা হয়, ভারতের একটি মেগা সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাগিয়ে নিতে দেশটির কয়েক জন কর্মকর্তাকে মোট ২৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঘুষ প্রদান করেছিলেন গৌতম আদানি। প্রকল্পের ঠিকাদারির কাজ নিজের প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রিন এনার্জিকে পাইয়ে দেওয়ার জন্যই এ ঘুষ প্রদান করেছিলেন তিনি।
ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসসহ অন্যান্য বিরোধী দল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিরুদ্ধে আদানি গ্রুপকে সুরক্ষা দেওয়ার এবং ভারতের অভ্যন্তরে তার বিরুদ্ধে তদন্ত বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ এনেছে। তবে মোদি ও বিজেপি উভয়েই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
অধিবেশন মুলতবির পর কংগ্রেসের এমপি মণিকম ঠাকুর ভারতের সংবাদমাধ্যম এনআইকে বলেন, আমরা এ ইস্যুতে পার্লামেন্টে আলোচনা করতে চাই। গত তিন দিন ধরে কংগ্রেস (এ ইস্যুতে) প্রধানমন্ত্রীর ব্যাখ্যা চাইছে, কিন্তু তিনি এবং তার দলীয় এমপিরা বারবারই এড়িয়ে যাচ্ছেন। আজ আমরা যখন ফের এ ব্যাপারে আলোচনা করতে চাইলাম— তখন তারা (বিজেপি এমপিরা) হট্টগোল শুরু করলেন।
ভারতের গুজরাট রাজ্যে জন্ম-বেড়ে ওঠা গৌতম আদানির এবং তিনি ক্ষমতাসীন বিজেপির একনিষ্ঠ সমর্থক। ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও গুজরাট রাজ্য থেকে উঠে আসা। সেই হিসেবে মোদির সঙ্গে সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ আদানির।
অবশ্য অভিযোগ গঠন ও পরোয়ানা জারির পর তার প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদি কিংবা বিজেপির কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে একটি কথাও বলেননি।
তবে বিজেপির শীর্ষ পর্যায়ের কয়েক জন নেতা নামপ্রকাশ না করার শর্তে এএনআইকে বলেছেন, প্রকাশ্যে পক্ষাবলম্বন না করলেও তার বিরুদ্ধে কখনও যাবে না বিজেপি। কারণ দলটি বিশ্বাস করে, জাতি গঠনের ক্ষেত্রে শিল্পপতিরা অংশীদার।