পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া (কেপি) প্রদেশের কুররম জেলায় চলমান গোষ্ঠীগত সহিংসতায় আরও দু’জনের মৃত্যু এবং ১০ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে চলমান সহিংসতায় কুররম অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা স্থগিত এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
পেশোয়ার-পরাচিনার মহাসড়ক অবরুদ্ধ থাকায় মানুষের দৈনন্দিন জীবন ও বাণিজ্য কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অঞ্চলটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য স্থানীয় প্রশাসন উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
কুররমের ডেপুটি কমিশনার জাভেদ উল্লাহ মেহসুদ জানান, আমরা সহিংসতা বন্ধ এবং পরিবহন যোগাযোগ পুনরায় চালুর বিষয়ে অগ্রগতি আশা করছি।
এদিকে সহিংসতার কারণে পরাচিনারে আটকা পড়েছেন দুজন বিচারক এবং ২৫ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা। প্রাদেশিক সরকার তাদের উদ্ধারে হেলিকপ্টার ব্যবহারের প্রস্তাব দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সংঘর্ষের পটভূমি
কুররম জেলায় গত ২১ নভেম্বর থেকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত। সংঘর্ষের সূচনা হয় পুলিশের পাহারায় থাকা দুটি কনভয়ের ওপর হামলার মাধ্যমে। যার ফলে প্রথম দিনেই ৫২ জনের মৃত্যু হয়।
এর মধ্যে আগেই একটি দশ দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি করা হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি।
অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকট
এদিকে সহিংসতার কারণে প্রধান মহাসড়ক অবরুদ্ধ থাকায় আফগানিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে, বিশেষত খারলাচি সীমান্তে। স্থানীয় বাসিন্দারা খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সংকটে পড়েছেন।
পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন (এইচআরসিপি) জানিয়েছে, সহিংসতায় জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে ৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা এই অঞ্চলের চলমান অস্থিতিশীলতার প্রতিফলন।
পূর্ববর্তী শান্তি প্রচেষ্টা
কেপি চিফ সেক্রেটারি নাদিম আসলাম চৌধুরী এবং আইজিপি আখতার হায়াত গান্দাপুরসহ একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল গত সপ্তাহে কুররমে যুদ্ধবিরতির জন্য একটি আলোচনা চালিয়েছিল। তবে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সহিংসতা পুনরায় শুরু হয়েছে।
কুররম অঞ্চলে এই দীর্ঘমেয়াদী সহিংসতা স্থায়ী সমাধানের অভাবে মানবিক সংকটের দিকে এগোচ্ছে বলে মনে করছেন বিষেশজ্ঞরা। সূত্র: জিও নিউজ