শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩০ পূর্বাহ্ন

পরিযায়ী পাখির কলতানে মুখর খাল-বিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৯ প্রদর্শন করেছেন

অতিথি পাখির আগমনে মুখর মেহেরপুরের খাল-বিল। বিশেষ করে এখানকার তেরঘরিয়া বিল, ছুচোখোলার বিল, মেহেরপুরের সবচেয়ে বড় গাংনীর ধলার বিলে পাখির আনাগোনা বেশি। পাখিদের কলতানে সারাক্ষণ মুখর থাকছে। এসব পাখি দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন হাজারো পাখিপ্রেমী। একসময় এসব বিল শীতকালজুড়ে অতিথি পাখিতে ভরে থাকত। মনে হতে এটিই তাদের স্থায়ী আবাসস্থল। এসব পাখি দেখতে আগে যেমন দূরদূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসতেন, আজও তেমনি আসছেন।

এদিকে সংকট তৈরি করছেন পাখি শিকারিরা। শনিবার সরেজমিন তেরঘরিয়া বিলপাড়ে গিয়ে বেশ কয়েক শিকারিকে দেখা গেল পাখি শিকার করতে। শিকারের দৃশ্য ধারণ করতে গেলে তারা তেড়ে আসেন। হুমকি দেন কোনো ছবি না তোলার জন্য। একপর্যায়ে পাখি দেখতে আসা লোকজন সাংবাদিকদের পক্ষ নেওয়ায় তারা সটকে পড়েন। পরিযায়ী পাখি হত্যার দায়ে দোষীকে সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান আছে। কিন্তু মেহেরপুরের খাল-বিলে অবাধে পাখি শিকারের বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই।

শনিবার আরও লক্ষ্য করা যায়, বিলের শান্ত বিলের বুকে ঝাঁকবেঁধে ডানা মেলছে অতিথি পাখির দল। উড়ে চলা পাখির কিচির-মিচিরে মুখরিত চারপাশ। পিয়াং হাঁস, পাতি সরালি, লেঙজা হাঁস, বালিহাঁস, পাতিকূটসহ দেশি জাতের শামুকখোল, পানকৌড়ি বিল এলাকা মুখর করে তুলেছে। কিন্তু সংখ্যায় গত বছরের প্রায় অর্ধেক। এবারও মানিকচকসহ সাইবেরিয়ান বিভিন্ন অতিথি পাখি চোখে পড়ার মতো। সন্ধ্যা নেমে আসার সঙ্গে সঙ্গে পাখিদের উড়ে আসার মিছিল যেন প্রাণ জুড়িয়ে দেয়।

তেরঘরিয়া বিলপাড়ে এলাকার স্থানীয় সাংবাদিক মোর্তুজা ফারুক জানান, নভেম্বর এলেই পাখিগুলো যে কোথা থেকে আসে জানি না। তবে প্রচুর পাখি আসে এই বিলে। খান মোহাম্মদ আল রাফি জানান, অনেক বছর ধরেই পাখি আসে এই বিলে। এই বিলের সঙ্গে অতিথি পাখিদের হৃদয়ের সম্পর্ক অনেক গভীর ও প্রাচীন।

পাখিপ্রেমী সদানন্দ মন্ডল বলেন, আমাদের অসচেতনতার অভাবে সামান্য স্বার্থের কারণে বা শখের কারণে আমরা শীতের পরিযায়ী পাখিদের শিকার করছি। এতে করে আমরাই আমাদের এই সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশকে ধ্বংস করছি। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য পাখির বিচরণক্ষেত্র রক্ষা করতে হবে। আমাদের দেশ ক্রমেই অতিথি পাখির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। শুধু আইন দিয়েই পাখি শিকার বন্ধ করা যাবে না। সর্বস্তরের মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ