গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন চলছে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলজুড়ে আকস্মিক রকেট হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। ধাক্কা কাটিয়ে পাল্টা-প্রতিক্রিয়া জানাতে খুব বেশি সময় নেয়নি ইসরাইল।
হামাসবিরোধী অভিযানের নামে গাজায় চলছে নির্বিচার বোমা বর্ষণ। নিহত হয়েছে ৪৫ হাজারের কাছাকাছি মানুষ, আহত হয়েছে ১ লাখেরও বেশি মানুষ। সেইসঙ্গে গাজার ওপর অবরোধ জারি করে রেখেছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। বিদ্যুৎ, পানি, খাবার ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় সরবরাহ বন্ধ। চরম সংকটের মুখে পড়ে সাধারণ গাজাবাসী। গাজায় এসব ঘটনার সবচেয়ে ভুক্তভোগী নারী ও শিশুরা।
নির্বিচার মৃত্যু ও ধ্বংসস্তুপের মাঝেও, চিত্রকর্মের মাধ্যমে নিজের প্রতিভা তুলে ধরেছেন মায়সা ইউসেফ নামের এক ফিলিস্তিনি নারী চিত্রশিল্পী।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি চিত্রশিল্পী মায়সা ইউসেফ, যিনি এখনও গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের মধ্যে শিশুদের জন্য আর্ট সেশন করেন। মধ্য গাজার দেইর এল-বালাহতে ইসরাইলি বাহিনীর দ্বারা ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িকে তিনি তার স্টুডিও বানিয়েছেন।
ছবিতে দেখা যায়, ফিলিস্তিনি শিশুরা গাজা উপত্যকায় ধ্বংসাবশেষে তার তার আর্ট স্টুডিওতে মায়সা ইউসেফ আর্ট সেশনের শিশুদের সময় দিচ্ছেন।
গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান ইসরাইলি আগ্রাসন বিবেকবান সব মানুষের মনকেই নাড়া দিয়েছে। ধ্বংসলীলার মাঝেও চিত্রশিল্পী মায়সা ইউসুফ তার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরাইল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইসরাইলের হামলার কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৭০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরাইল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।