রাজধানীর মালিবাগ বাজারে বিভিন্ন পণ্য কেনার পর সয়াবিন তেল কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন বেসরকারি চাকরিজীবী খাদেমুল ইসলাম। তিনি ৪/৫ টি দোকান ঘুরে কোথাও পাননি সয়াবিন তেল। পরে একটি দোকানে এক লিটারের একটি তেল পেলেও গায়ের লেখা দামের চেয়ে ১০টা বেশি চেয়েছে দোকানি।
দোকানে কেন সয়াবিন তেল নেই জানতে চাইলে মহাখালীর এক মুদির দোকানি শহিদুল ইসলাম বলেন, আসলে বেশিরভাগ দোকানেই বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। কোম্পানি থেকে সরবরাহ করছে না, তাই আমরাও পাচ্ছি না। যাদের দোকানে দুই চার বোতল তেল আছে, তারা কিছুটা বেশি দাম নিচ্ছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেলের গায়ের দাম ১৬৭ টাকা, দুই লিটার ৩৩৪ টাকা ও পাঁচ লিটার ৮১৮ টাকা। বেশিরভাগ দোকানে এ দামের চেয়ে ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। আর বেশিরভাগ খুচরা দোকানেই মিলছে না সয়াবিন তেল।
অন্যদিকে কিছুদিনের ব্যবধানে খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েল লিটারে পাঁচ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে খোলা পাম অয়েল ১৬০ থেকে ১৬২ এবং সয়াবিন ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত সয়াবিন ১৬৭ টাকা লিটার গায়ের মূল্য।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোম্পানি ও ডিলার তেল সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। পাঁচ কার্টন চেয়ে মিলছে এক কার্টন।
এদিকে আমদানিকারক ও বাজারজাতকারীরা বলছেন, বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার কারণে তেল সরবরাহ কমেছে। বিশ্ববাজারের হিসেবে লিটারে ১২-১৩ টাকা বাড়ার কথা। সরকার দুই দফায় শুল্ককর কমানোর কারণে স্থানীয় পর্যায়ে দর বাড়ানো হয়নি। আগের দরে বিক্রি করে মিলারদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। ফলে চাহিদার তুলনায় আমদানি কমেছে ২০ শতাংশের মতো।
সয়াবিনের দাম নিয়ে কারওয়ান বাজারের পাইকারি দোকানি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিভিন্ন কোম্পানি তাদের তেল সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম বোতলজাত সয়াবিন তেলের। খুচরা বিক্রেতারা কাস্টমারদের চাহিদার তুলনায় তেল পাচ্ছে না, তাই তাদের দোকানে তেলের সংকট দেখা যাচ্ছে। ক্রেতারও সয়াবিন কিনতে গিয়ে পাচ্ছে না। অনেক কোম্পানি আবার তেলের সঙ্গে অন্যান্য পণ্য কেনার শর্ত জুড়ে দিচ্ছে।
তবে এ বিষয়ে একাধিক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও বাজারে তেল না পাওয়া বা কোম্পানি থেকে সরবরাহ নিয়ে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে দেশে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেল আমদানি হয়েছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার টন। গত বছরের একই সময়ে এই আমদানির পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৬০ হাজার টন। সে হিসেবে আমদানি কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। এছাড়া বিভিন্ন কারণে এবার আমদানিকারকের সংখ্যাও কমেছে।