কিছুতেই চালের দামের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। দফায় দফায় বাড়ছে দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরে সবধরনের চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। আর খুচরা বাজারে মিনিকেটসহ সবধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে চার টাকা। কুষ্টিয়ার বাজারে চালের দাম বাড়লে সারাদেশেও দাম বেড়ে যায়। দফায় দফায় চালের দাম বাড়ায় খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। ক্ষুব্ধ ক্রেতারা বলছেন, যেভাবে সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়ানো হচ্ছে, তাতে চালের দাম সেঞ্চুরি ছুঁতে আর খুব বেশি দিন হয়তো অপেক্ষা করতে হবে না।
বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন প্রধান জানান, ডিসেম্বরের প্রথম দিক থেকেই কুষ্টিয়ায় চালের দাম বাড়া শুরু হয়েছে। মিনিকেট চাল ১৫ দিন আগে ৫০ কেজির বস্তা ছিল ৩৪০০ টাকা। এখন দাম প্রতিকেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। অন্যান্য চালের মধ্যে বাসমতি চাল কেজিতে তিন টাকা বেড়েছে। আঠাশ চাল কেজিতে দুই টাকা এবং স্বর্ণাসহ অন্যান্য চালের দামও ১৫ দিনের ব্যবধানে দুই টাকা বেড়েছে। বাজারে মোটা স্বর্ণা এবং আঠাশ মণপ্রতি ১৫০ টাকা বেড়েছে। মিনিকেট ধান প্রতিমণে ২০০ টাকা করে বেড়েছে। এখন মিনিকেটের সিজন না। মৌসুম আসতে আরও তিন মাস সময় লাগবে।
জয়নাল আবেদীন দাবি করেন, মিনিকেট এবং বাসমতি চালের দাম বাড়লে এর প্রভাব অন্য চালের ওপর গিয়ে পড়ে। এ সমস্যার সমাধানে দ্রুত সরু চাল আমদানি করে বাজার নিয়ন্ত্রণে নেওয়া এবং চালের বাজারের পাশাপাশি মিল-মালিকদের ধান-চাল মজুত নিয়মিত কঠোরভাবে মনিটরিং করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মিনিকেট চালের জন্য কুষ্টিয়ার খাজানগর সারা দেশে পরিচিত। এখানে ৬৪টি অটো চালকলে এই চাল উৎপাদিত হয়। প্রতিদিন শত শত ট্রাক মিনিকেট চাল ঢাকাসহ সারা দেশে সরবরাহ করা হয়। মিলমালিকেরা বলছেন, গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগে প্রতিকেজি মিনিকেট চালের দাম ছিল ৬৭ টাকা। ১০ অক্টোবর সেই দাম কমে দাঁড়ায় সাড়ে ৬৬ টাকায়। এরপর থেকে এই চালের চাহিদা বাড়তে থাকে। খাজানগরের গোল্ডেন রাইস মিলের মালিক জিহাদুজ্জামান জিকু বলেন, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মিনিকেট চাল উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত ধানের দাম মণপ্রতি ৩০০ টাকা বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগে যে ধানের দাম ছিল মণ ১ হাজার ৫০০ টাকা, তা এখন ১ হাজার ৮০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে মিলগেটে মিনিকেট চালের দাম বাড়াতে হয়েছে।