নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌর এলাকায় প্রবাসীর স্ত্রী শাহনাজ আক্তার পিংকি (৩৪) হত্যার ঘটনায় আসামি খালেদ সাইফুল্যাহকে (২৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি ওই প্রবাসীর স্ত্রীর চাচাতো দেবর। হত্যার পর খালেদ সাইফুল্যাহ তাবলিগ জামাতে চলে যান বলে জানা গেছে।
খালেদ সাইফুল্যাহ (২৮) গৃহবধূকে পরকীয়ার প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আরও দুই আসামি পলাতক রয়েছেন।
মঙ্গলবার ভোরে নরসিংদী জেলার নলুয়া জামে মসজিদ এলাকা থেকে তাবলিগ জামাতের একটি দল থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত খালেদ সাইফুল্যাহ চৌমুহনী পৌর হাজীপুর এলাকার আবদুল কাইয়ুম লিটনের ছেলে।
পুলিশ জানায়, গত ১৭ ডিসেম্বর হত্যাকাণ্ডের পরপরই মূল আসামি খালেদ সাইফুল্ল্যাহ ফেনী চলে যায়। সেখান থেকে ঢাকার কাকরাইল জামে মসজিদে গিয়ে তাবলিগ জামাতের সঙ্গে যোগদান করে আত্মগোপন করে। পরবর্তীতে ঢাকায় ৩ দিন তাবলিগ জামাত শেষ করে নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানাধীন মৌলভীবাজার এলাকার নলুয়া জামে মসজিদে যায়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তার অবস্থান নির্ণয় করে ওই এলাকায় অভিযান চালায় বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। মঙ্গলবার ভোরে নলুয়া মসজিদ থেকে অন্যত্রে চলে যাওয়ার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিটন দেওয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি স্বীকার করেছে গৃহবধূকে পরকীয়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিক্ততার জেরে খালেদ সাইফুল্যাহ এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আসামির রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ওসি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বাবা বেলায়েত হোসেন বাদী হয়ে খালেদ সাইফুল্যাহসহ তিনজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, আসামি খালেদ সাইফুল্ল্যাহ ভিকটিমের চাচাতো দেবর হয়। ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন মেরামত করার জন্য আসামিকে দিলে সে সুকৌশলে ভিকটিমের মোবাইলে থাকা ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে এডিটিংয়ের মাধ্যমে অশ্লীল ছবি ও ভিডিওতে রূপান্তর করে। পরবর্তীতে আসামি উক্ত ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে ভিকটিমকে কুপ্রস্তাব দেয়। ভিকটিম কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে আসামি ছবি/ভিডিওগুলো ইন্টারনেটে ভাইরাল করার হুমকি দেয়।
বিষয়টি ভিকটিম প্রবাসী স্বামীর মাধ্যমে খালেদ সাইফুল্যাহর পরিবারকে জানিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করলে সে আরও বেপরোয়া হয়ে ভিকটিমকে বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দেয়। পরে গত ১৭ ডিসেম্বর সকালে ভিকটিম তার শ্বশুরসহ বাবার বড়ি যাওয়ার পথে বাদশা মিয়া মসজিদের সামনে ছোরা দিয়ে কুপিয়ে ভিকটিমকে হত্যা করে। একই সময়ে ভিকটিমের শ্বশুর রেজাউল হককে (৮০) কুপিয়ে জখম করে।