বরিশালের আগৈলঝাড়ায় দুই পাড়ার লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে মোটরসাইকেল, বাড়িঘর, আসবাব ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের ঘটনায় ২০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় নারীদের ওপর হামলা ও শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটেছে।
ভাঙচুরের সংবাদ পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তিসহ চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগ ও আহত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের পূর্ব বারপাইকা গ্রামের আল মদিনা জামে মসজিদের সামনে পূর্ববিরোধের জেরে পশ্চিম বারপাইকা (দুশমী) গ্রামের রাসেল শাহ, এনেক শাহ, সাচ্চু মোল্লা ও তামিম মোল্লার নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সোমবার রাতে হামলা করে। এ সময় হামলাকারীরা মাহতাব শাহ, আসরাফ আলী শাহ, রাব্বি শাহের বসতঘর ও আসবাব ভাঙচুর করে।
মসজিদের সামনে আলমগীর শাহের ফার্মেসি, প্রতিবন্ধী আমিন শাহের মুদির দোকান, একটি পিকআপ গাড়ি, দুইটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। হামলাকারীরা মসজিদের মাঠের নির্মাণাধীন কবরস্থানের বাউন্ডারি ওয়ালও ভাঙচুর করেছে।
এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষে আহত হয়েছেন- শাহে আলম শাহ, মুইন শাহ, লিয়ন শাহ, রাব্বি শাহ(বড়), রাবেয়া বেগম, সজিব শাহ, ইয়াদুল শাহ, মাশরিফ শাহ, তামিম শাহ, রিফাত শাহ, পিয়াল শাহ, নাইম শাহ, রাব্বি শাহ (ছোট), হাছিব শাহ, আমিন শাহ, শাওন শাহ, সালমা বেগম, সোনিয়া বেগম, সাগরি বেগমসহ ২০ জন।
গুরুতর আহত শাহে আলমসহ তিনজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলেও বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
হামলা ও ভাঙচুরের খবর পেয়ে সোমবার রাতেই আগৈলঝাড়া থানার এসআই আব্দুল্লা আল মামুন ক্ষতিগ্রস্ত বসত-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। এ ঘটনায় মাহতাব শাহ বাদী হয়ে সোমবার রাতেই আগৈলঝাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
আহত সজিব শাহ বলেন, দেড় বছর আগে পশ্চিম বারপাইকা গ্রামের তামিম মোল্লার কাছে ৪ হাজার টাকায় একটি গিটার বিক্রি করি। তামিম কিছুদিন পর এক হাজার টাকা দিলেও বাকি ৩ হাজার টাকা দীর্ঘদিনেও না দেওয়ায় ২১ ডিসেম্বর পশ্চিমপাড়ার ওয়াজ মাহফিলে দেখা হলে তামিমের কাছ থেকে তার অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন নিয়ে আসি। কিছু সময় পরেই এলাকার বড় ভাইদের নির্দেশে মোবাইল ফোন ফেরত দিতে গেলে আমাদের ওপর তামিমের লোকজন হামলা করে। এর জেরে সোমবার রাতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত তামিম মোল্লাকে না পাওয়ায় তার বাবা হাসনাত মোল্লা বলেন, আমার ছেলে তামিম মোল্লার মাধ্যমে গৌরনদী উপজেলার এক ব্যক্তির কাছে সজিব শাহ গিটার বিক্রি করে। সেই টাকা আদায়ের ঘটনা নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অলিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, পূর্ববিরোধের জেরে বারপাইকা গ্রামের দুইপক্ষের মধ্যে হামলা-পালটা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনাটি তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।