বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন

সম্পদের পাহাড় গড়েছেন ফেনী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ড্রাফটসম্যান শাহিন আলম

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ বুধবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৪০ প্রদর্শন করেছেন

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কার্যালয়ের ড্রাফটসম্যান হয়ে আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ পেয়ে বিপুল অঙ্কের অর্থ উপার্জন সহ নামে বেনামে সম্পত্তির পাহাড় গড়েছেন মোঃ শাহিন আলম। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ড্রাফটসম্যান বা নক্সাকার এর এক নকশায় পরিবার সহ তার নিজ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নকশা পাল্টে গেছে।

ফেনী জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের ড্রাফটসম্যান হয়ে অনিয়মিত অফিস করে ঠিকাদারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে বাবা, ভাই, বোন ও নিজ স্ত্রীর নামে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি এ যেন এক গল্প বা উপন্যাসের মতো। অজো পাড়াগাঁয়ে জন্ম নেয়া ড্রাফটসম্যান মোঃ শাহিন আলম এখন অঢেল সম্পত্তির মালিক গ্রামের বাড়িতে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি গড়ে নিজ জন্মভূমি ৫ নং শুভপুর ইউনিয়নের তেলেহাঁটিতে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণ কাজ করেছেন।

 

অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এমন আলোড়ন সৃষ্টি করা তথ্য। তেলেহাঁটি গ্রামের জয়নাল আবেদীন এর চার ছেলে এক মেয়ের মধ্যে মোঃ শাহিন আলম তৃতীয় বড় দুই ভাই শিক্ষিত না হলেও ছোট ভাই সোহেল রানা মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়েছেন। বাবার পরিশ্রম ও স্বপ্ন বৃথা যেতে দেননি ড্রাফটসম্যান মোঃ শাহিন আলম। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের পর বৈধ ভাবে না হলেও অবৈধভাবে জন্মদাতা পিতার স্বপ্ন পূরণ করে বাবাকে কিনে দিয়েছেন চাষাবাদের জন্য সম্পত্তি। শুধু বাবা নয় বড় ভাই ও ছোট ভাইকেও নিরাস করেননি বড় দুই ভাই এখন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ছোট ভাইয়ের হাতে তুলে দিয়েছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা ড্রাফটসম্যান মোঃ শাহিন আলম এতটাই বুদ্ধিমান সবাইকে সবকিছু দিয়ে নিজ নামে কিছুই রাখেননি।

অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেড়িয়ে আসে থলের বিড়াল সরকারি কর্মকর্তা ড্রাফটসম্যান মোঃ শাহিন আলম ২২০০০ (বাইশ হাজার) টাকা বেতনের চাকরি করে কিভাবে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছেন। তার পেছনের গল্পটা আনুমানিক সবারই জানা বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকারের এক মন্ত্রী ও চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়রের সাথে সু-সম্পর্ক গড়ে তুলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের টিউবওয়েল দূর্নীতি ও অনিয়ম করে অবৈধভাবে বিক্রি করে সবাই ভাগাভাগি করে নিতেন। এভাবে আস্তে আস্তে চলেযান ঠিকাদারি ব্যবসায় বিভিন্ন দপ্তরের টেন্ডার নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে বর্তমানে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।

 

দূর্নীতি ও অনিয়ম করে এভাবে অবৈধভাবে গড়ে তোলা সম্পদের অভিযোগ করলেও কোন লাভ বা প্রতিকার পাওয়া যায়নি কারণ টাকার চাপে সকল সমস্যার সমাধান করেন। শুধু আওয়ামীলীগ সরকারের রাজনৈতিক নেতারাই নয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সক্ষতা গড়ে তুলে বর্তমানে শত কোটি টাকার প্রকল্প হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। নিজ জন্মভূমিতে বসবাসকারীদের তথ্য মতে ড্রাফটসম্যান মোঃ শাহিন আলমের পিতা জয়নাল আবেদীন গত ১৫ থেকে ২০ বছর আগে বাদাম বিক্রি করতেন। পৈতৃক সম্পত্তি ছিল ১৮ গন্ডা যা বর্তমানে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা ড্রাফটসম্যান মোঃ শাহিন আলমের সুবাদে ৫ নং শুভপুর ইউনিয়নের কাদৈর মৌজায় ২ কানি সম্পত্তি যাহার বর্তমান মূল্য প্রায় ৬ কোটি টাকা তেলে হাঁটি মৌজায় ৩২ গন্ডা সম্পত্তি যাহার বর্তমান মূল্য প্রায় ৯৬ লাখ টাকা। এছাড়াও বর্তমানে বিশাল ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণ কাজ চলছে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে এতেই শেষ নয় কুমিল্লা শহরের বাগিচাগাঁও এলাকায় সেল এপার্টমেন্টে রয়েছে ২০০০ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট রয়েছে ১১ টি ড্রাম ট্রাক ও ১০ টি বেকু মেশিন এবং এশিয়া এয়ারকোন ৫ টি যাত্রীবাহী বাস যেগুলোর বর্তমান মূল্য প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। নিজ স্ত্রীর নামে প্রায় ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি গড়ে তুলতেও দ্বিধা বোধ করেননি নিজের ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার এলিয়েন ব্যবহার করেন এই কর্মকর্তা ড্রাফটসম্যান মোঃ শাহিন আলম।

 

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকারের সময় সাবেক রেলমন্ত্রীর সাথে ৪০০ (চারশত) টিউবওয়েল বিক্রির টাকা নিয়ে ধন্ধ হয় বদলি হয়ে যান পঞ্চগড়ে কিন্তু ড্রাফটসম্যান মোঃ শাহিন আলমের এতটাই ক্ষমতা দখলে ছিল গত ১৭ জুলাই ২০২৩ ইং পূনরায় ফেনী জেলা জনস্বাস্থ্য নির্বাহী প্রকৌশল অধিদপ্তরে ফিরে আসেন। ফেনী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বললে তিনি জানান মোঃ শাহিন আলম ড্রাফটসম্যান বা নক্সাকার পদে রয়েছেন অফিস না করলেও তাঁর কোন সমস্যা নেই তাঁর বিষয়ে সকলেই জানেন। সে এতটাই ক্ষমতাধর যার কারণে কেউ কিছু করতে পারেনা অনেক গনমাধ্যম কর্মীরা এবিষয়ে জানেন কিন্তু কোন লাভ নেই তাকে কিছুই করতে পারবে না।

 

অনুসন্ধানে ড্রাফটসম্যান মোঃ শাহিন আলমের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে আশপাশের কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তার বড় দুই ভাই ও ছোট ভাই প্রবাসে থাকতো কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা ড্রাফটসম্যান মোঃ শাহিন আলমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার জন্য ভাইদের দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দেখাশোনা করার জন্য এবং তাদের নাম ব্যবহার করে সম্পত্তি গড়ে তোলার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। গ্রামবাসী আরও জানান যে সকলের ছোট ভাই মোঃ সোহেল রানা বিগত কয়েক বছর আগে এলাকায় পাম্প মটর চুরি করেন বিচার শালিসে চুড়ির দায়ে গলায় জুতার মালা পরানো হয়। গ্রামবাসীদের মতে যদি প্রবাস ফেরত তিন ভাই আরো একযুগ প্রবাসে থাকতো তাহলেও এতো সম্পত্তি গড়ে তোলা যেত না তাদের হাতে আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ আছে তাই এমন অঢেল সম্পদ গড়ে তুলতে পেরেছেন।

 

এলাকাবাসীর অনুরোধ বর্তমান সরকারের সংস্কার করা দূর্নীতি দমন কমিশন ড্রাফটসম্যান মোঃ শাহিন আলমের অবৈধপন্থায় গড়ে তোলা সকল সম্পদের হিসাব নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তবে সকল তথ্যের সত্যতা যাচাই বাছাই করতে ফোনে যোগাযোগ করা হয় ড্রাফটসম্যান মোঃ শাহিন আলমের সাথে কিন্তু সর্বক্ষেত্রে অপরাধি অপরাধ ঢাকতে যে সকল কথা বলেন তাঁর বেলায়ও ভিন্ন কিছু উত্তর আসেনি তিনি আমাদের বলেন ভাই নিউজ করে কি লাভ আমি আপনাদের সাথে দেখা করে শেষ করতে চাই। তাঁর অপকর্মের বিষয়টি প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন। ফেনী জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের ড্রাফটসম্যান মোঃ শাহিন আলমের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসছে ফেনী জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী সহ কুমিল্লা জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর যোগসাজশ এছাড়াও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নাম।

ড্রাফটসম্যান মোঃ শাহিন আলমের দূর্নীতি অনিয়ম ও অবৈধভাবে গড়ে তোলা সম্পদের বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে আমাদের অনুসন্ধান টিম কাজ করছেন। দ্বিতীয় পর্বে তুলে ধরা হবে আরও অবৈধভাবে গড়ে তোলা সম্পদের তথ্য।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ